একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল মরমী কবি খোদাবকশ শাহ’র যোগ্য উত্তরসূরী তানিয়া বিশ্বাস চমক দেখানোর অপেক্ষায়

রফিকুল ইসলাম: একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল মরমি কবি খোদাবকশ শাহ’র একমাত্র ছেলে আব্দুল লতিফ শাহ’র আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সাড়া জাগানোর খবরটি অনেকেরই জানা। তবে, যে খবরটি সামনে অপেক্ষা করছে তা হলো খোদাবকশ শাহ’র দৌহিত্রী আব্দুল লতিফ শাহর বড় মেয়ে তানিয়া বিশ্বাস এবার দুই বাংলা মাতাতে যাচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের জাহাপুর গ্রামের ভাটই নদীর পাড়ে জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন তানিয়া বিশ্বাস। চঞ্চলা নদীর মতোই তার পথচলা। ঘোলদাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর তানিয়া ইতোমধ্যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মেধাবী ছাত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বর্তমানে ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিভাগে স্নাতকে অধ্যয়নরত।
সম্ভাবনাময় এই শিল্পী সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মায়ের প্রেরণা ও বাবার সহযোগিতায় শৈশবেই সঙ্গীতে হাতেখড়ি তার। গান শেখার পর থেকে স্কুল ও কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এ পর্যন্ত অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। দাদা খোদাবকশ শাহ এবং বাবা লতিফ শাহ’র যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে পথ চলাতেই তার আনন্দ। তবে, নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতেই এখন প্রাণান্তর চেষ্টা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাহাপুর গ্রামের বাড়িতে বসে তানিয়া বিশ্বাসের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তানিয়া জানান, দাদু মোট ৯৫০টি গান লিখেছেন। স্থানীয় ও আশপাশের জেলার বাউলরা সেসব গান গেয়ে থাকেন। তবে, বেশ কিছু গান অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি হিসেবে ঘরে থাকায় তা এখন পর্যন্ত কোনো অনুষ্ঠানে কেউ গাননি। দাদুর গানগুলোকে সকল বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তুলে ধরতেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ছাত্রী হয়েছেন। তানিয়া বলেন, ‘প্রথমত দাদু এরপর বাবার নাম বলতেই দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতবোদ্ধারা আমাকে চিনতে পারেন। দেশের নামকরা ওস্তাদদের কাছে তালিম নিচ্ছি। এখানে স্নাতক পাস হওয়ার পর ভারতের পশ্চিমবাংলায় শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করতে চাই। এরপর সঙ্গীত নিয়ে জীবনের বাকি সময়গুলো পার করতে চাই। তবে, দাদু ও বাবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা অক্ষুণ্ণ রেখে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে চাই।’
মা রেখা বিশ্বাস তার মেয়ে তানিয়ার সঙ্গীতাঙ্গণে বিচরণে প্রধান সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। রেখা জানান, তানিয়ার ভেতর শিশুকাল থেকেই যে সম্ভাবনা দেখা গেছে, তা অভাবনীয়। জীবনে সে অনেক দূর যাবে। বাবা আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, ‘আমি দুই বাংলায় জনপ্রিয়। আমার বিশ্বাস, মেয়ে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা সারাবিশ্বের বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে নতুন বার্তা নিয়ে শিগগিরই হাজির হবে সে।’