একতা-সীমান্ত এক্সপ্রেস মুখোমুখি সংঘর্ষ : স্টেশন মাস্টারসহ ৪ জন বরখাস্ত

আন্তঃনগর দুটি ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত অর্ধশতাধিক : পৃথক তিনটি তদন্ত টিম গঠন

 

দিনাজপুর থেকে মাহিদুল ইসলাম রিপন:  দিনাজপুরে ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে খুলনামুখি সীমান্ত এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে দুটি আন্তঃনগর ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ফুলবাড়ী স্টেশনমাস্টার আব্দুল হামিদসহ চারজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্তকৃতরা হলেন-স্টেশনমাস্টার আব্দুল করিম, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক (লোক মাস্টার) আব্দুল করিম, সহকারী চালক (সহকারী লোক মাস্টার) শরিফুল ইসলাম ও গার্ড আজিজুর রহমান। দুর্ঘটনা কবলিত সীমান্ত এক্সপ্রেসটি স্টেশনে অবস্থান করছিলো, আর একতা এক্সপ্রেসটি ঢাকা থেকে ছেড়ে দিনাজপুরের উদ্দেশে ছুটছিলো। ঘটনা তদন্তে পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার ফলে দিনাজপুরসহ ৮ জেলার সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ ছিলো। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বীকার করেন যে, স্টেশন মাস্টার এবং পয়েন্ট ম্যানের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া স্টেশন মাস্টার আব্দুল হামিদ বলেন, ১ নং লাইনে সীমান্ত এক্সপ্রেস নিয়ে ২ নং লাইনে একতা নেয়ার প্রক্রিয়া করার মধ্যেই একতা ট্রেনটির চালক নিজ ইচ্ছায় ১ নং লাইনে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য একতা ট্রেনের চালকসহ সংশ্লিষ্টরাই দায়ী।

দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শনে আসা রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জোন রাজশাহীর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ফেরদৌস আলম বলেন, দুর্ঘটনা জন্য প্রাথমিকভাবে যাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদেরকে তাত্ক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পার্বতীপুর থেকে খুলনা যাওয়ার জন্য আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফুলবাড়ি স্টেশনে ১ নং লাইনে অবস্থান করছিলো। ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী আন্তঃনগর একতা ট্রেনটি একই লাইনে ঢুকে পড়লে দু ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে দু ট্রেনের দু ইঞ্জিনসহ দু ট্রেনের চারটি কোচ (বগি) দুমড়ে মুচড়ে ছিটকে পড়ে। এতে আন্তত অর্ধশত যাত্রী আহত হন। ফুলবাড়ি থানা পুলিশ, পার্বতীপুর জিআরপি পুলিশ, ফুলবাড়ি ফায়ার স্টেশনের কর্মীসহ স্থানীয়রা দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া কোচ থেকে ১২ জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে এবং আমজাদ হোসেন (৫০) নামের একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।