একটি সৃষ্টপদের বিপরীতে ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ : নেপথ্যে ২০ লাখ টাকা লেনদেন

আলমডাঙ্গার খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কর্মকাণ্ডে বিস্মিত এলাকাবাসী

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক সৃষ্ট পদের বিপরীতে ৪ জনকে নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকার অর্থ বাণিজ্যের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। একই পদে একাধিক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক হাজিরাখাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করছেন বলেও ওয়াকিবহালমহল দাবি করেছে। প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ডে বিস্ময়ে হতবাক এলাকার সচেতনমহল।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের ১টি সৃষ্ট পদের বিপরীতে অবৈধভাবে ৪ জনকে নিয়োগ দেয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়সূত্রে জানা গেছে, প্যাটার্ন অনুযায়ী বিদ্যালয়টিতে আর কোনো শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই। তারপরও শুধু অর্থবাণিজ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকারি নিয়োগ নীতিমালাকে অগ্রাহ্য করে বছরের প্রথমেই অতিসংগোপনে নামমাত্র প্রচারিত সংবাদপত্রে এ শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে একটি সৃষ্ট পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। অথচ পরবর্তীতে সেই একটি পদের বিপরীতে ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আলিফ নূর নামের মাত্র একজন শিক্ষকের ফাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এমপিওভুক্তির জন্য। বাকিদের ভাগ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অত্র বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, নিয়োগপত্র ভুয়া জেনেও জেসমিন আক্তার নামের একজন নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত হন ও আলিফ নূরের পাশাপাশি হাজিরাখাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করেন। এছাড়াও অনিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন রোজিনা আকতার ও আব্দুল হান্নান। এ সম্পর্কে বিদ্যালয়ের নিয়োগদানকারী সভাপতি আরজান আলী দাবি করেছেন, তিনি শুধু আলিফ নূরকেই ওই পদে নিয়োগ দিয়েছেন। একই পদে ৪ জন কীভাবে নিয়োগ পেয়েছেন তা তিনি জানেন না। খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্যাটার্ন বহির্ভূত শিক্ষক নিয়োগ ও একটি পদের বিপরীতে ৪ জন নিয়োগের বিষয়ে কিছু জানেন কি-না জিজ্ঞেস করলে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, একটি পদের বিপরীতে ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ অবৈধ তো বটেই, এমনকি প্যাটার্ন বহির্ভূত একজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলেও তা অবৈধ। এমনকি এক্ষেত্রে ওই শিক্ষকের এমপিওভুক্তির কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে প্রধান শিক্ষক গোলাম সিদ্দিকের এমন কর্মকাণ্ডে এলাকার সচেতন মানুষ বিস্ময়ে হতবাক। এলাকার অনেকে অভিযোগ করেছেন, নিয়োগকৃত ৪ শিক্ষকের নিকট থেকে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি হাতিয়ে নিয়েছেন ২০ লাখের অধিক টাকা। খাসকররা দক্ষিণপাড়ার জেসমিন আকতারের নিকট থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার, ভাণ্ডারদহের রোজিনা খাতুনের নিকট থেকে ৫ লাখ, খাসকররা পূর্বপাড়ার আব্দুল হান্নানের নিকট থেকে ৫ লাখ ১০ হাজার ও কালুপোলের আলিফ নূরের নিকট থেকে একই পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। মূলত এ বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিতেই ধড়িবাজ প্রধান শিক্ষক একই পদের বিপরীতে ৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে সৃষ্টিছাড়া অপকর্মের নজির স্থাপন করেছেন বলে এলাকার অনেকেই মন্তব্য করেছেন।