এইচএসসির ফল বিপর্যয় : কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মঙ্গলবার এক অনানুষ্ঠানিক নোটে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট অধিশাখাকে এ নির্দেশ দেন। তিনি দেশের ২০টি কলেজের ফল পর্যালোচনা মাধ্যমে কারণ উদঘাটন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ারও নির্দেশ দেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ বুধবার মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভা রয়েছে। মূলত ওই সভাকে সামনে রেখে শিক্ষামন্ত্রী এ অনানুষ্ঠানিক নোট জারি করেন। এ নোট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। এতে শিক্ষামন্ত্রী এইচএসসি পরীক্ষার ফল পর্যালোচনাসহ মোট ২৬টি নির্দেশনা দিয়েছেন। জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, সমন্বয় সভাকে সামনে রেখে কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কাজের তথ্য ও অগ্রগতি সম্পর্কে প্রস্তুতি নিয়ে আসার জন্য একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাতে এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়টি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ৯ আগস্ট প্রকাশিত হয়। এরপর নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। আসলে এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যেও পর্যালোচনা হওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া ফল প্রকাশের দিনও আমি এই পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছিলাম।

শিক্ষামন্ত্রীর ২৬ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সরকারি কলেজকে জরুরিভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ। দেশের যে সব উপজেলায় সরকারি হাইস্কুল বা কলেজ নেই, সেখানে একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করার জন্য এক মাসের মধ্যে তালিকা, বিধিমালা ও ব্যয়ের পরিমাণ স্থির করা, নতুন বেসরকারি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কোনোক্রমেই যেন ফাঁস না হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রেখে প্রশ্নপত্র ছাপাতে হবে। এখন থেকেই এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দ্রুত আইনশৃঙ্খলা ও তদারকি কমিটিকে সক্রিয় করতে হবে। ইউজিসি আইন চূড়ান্ত করতে হবে। অ্যাক্রেডিশন আইন চূড়ান্ত করতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ভ্যাট (৭.০৫%) ধার্য করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন/মর্যাদা ইত্যাদি বিষয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ এবং ছোটখাটো আন্দোলন করেছেন। আমি ভিসি পরিষদ ও শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করেছি। পরিস্থিতি শান্ত ছিলো। আবার আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছেন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি সরকারি কর্মচারীদের সাথে একই সাথে না হলে তারা আন্দোলন করবে (নতুন বেতন কাঠামোতে)। এজন্য কিছু চেষ্টা করা যায়। শিক্ষকদের সব স্তরে দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে। টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করলেও ৭০ ভাগ উপস্থিতি থাকলে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে, জনমত ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিল। বাতিল করায় সব মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নায়েম-এ সিনিয়র কোর্স প্রণয়ন হবে। এজন্য ইউনেস্কোর ২৫ হাজার ডলার তহবিল হবে। সরকারের এতে অংশ ৫ লাখ ডলার। নায়েমের জন্য একটি নতুন প্রজেক্ট তৈরি করা প্রয়োজন। মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদানের তারিখ চূড়ান্তকরণ করতে হবে। বিভিন্ন বিভাগ, অধিশাখা ও দফতরে কাজের পরিকল্পনা স্থির করতে হবে। অবসর সুবিধা বোর্ডের কমিটি গঠন করতে হবে। বোর্ডের মূল তহবিল বৃদ্ধি করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, অটিস্টিক একাডেমির জন্য আশুলিয়ায় স্থান পাওয়া গেছে। এর কাজ শুরু করা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের আন্দোলন সমাধানের চেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষক (৩ গ্রুপ) ভিসি ও স্থানীয় নেতাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিরসনের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে ভিসি, শিক্ষক, সিনেট সদস্যদের সাথে আলোচনা আপাতত সমাধান করা হয়েছে। প্রকল্প প্রণয়ন চূড়ান্ত করে একনেক এ দ্রুত পাঠানো। যথাসময়ে বই ছাপানো ও পাঠানো জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) নিশ্চিত করতে হবে। আগের গৃহীত সিদ্ধান্ত ও করণীয় বাস্তবায়ন করতে কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা পর্যালোচনা করে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।