উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন : খাল খনন বন্ধ

চুয়াডাঙ্গার গহেরপুরে খাল খননের নামে হরিলুটের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার : জনগণের কোনো উপকারে আসবে না এমন খাল খননের নামে ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে কামরিয়া-পাকশিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কতিপয় কর্তারা। শর্ত ভঙ্গ করে নিজের ইচ্ছামতো নামকাওয়াস্তে খাল খনন করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সমিতির বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার। খাল খননের কাজে অনিয়মের সত্যতা মেলায় সাময়িকভাবে খাল খননের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকারি অর্থ কোনোভাবেই যেনো অপচয় না হয় সে ব্যাপারে বার্তা দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের কামরিয়া-পাকশিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি খাল খনন করে বর্ষা মরসুমে কামরিয়া বিলের পানি নিষ্কাশন করতে বিভিন্ন শর্তে ২ কি.মি. খাল খননের জন্য ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬শ’ ১১ টাকা বরাদ্ধ পায়। যেখানে ২নং শর্তে ১৫টি এলসিএস দল গঠন পূর্বক চুক্তি সম্পাদন করা, ৫নং শর্তে কাজটি পরিবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা, ৬নং শর্তে কাজ শুরুর পূর্বে কাজের স্থলে সাইনবোর্ড টাঙানো এবং সাইড অর্ডার বহি রাখা, ৭নং শর্তে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করে যথাযথ দফতরকে জানানো। শর্ত পূরণের ধার না ধেরে ঢাকা থেকে ড্রেজার মেশিন ভাড়া করে এনে গত ২৯ মার্চ খাল কাটার কাজ শুরু করেন সমিতির সভাপতি। কামরির বিলে যাদের জমি আছে তাদের অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেন, মালিকানা জমিতে বর্তমানে অনেক পুকুর হয়ে গেছে। যেখানে মাছ চাষ হয়। যে খাল কাটা হচ্ছে সে খালের ওপর ৬টি ব্রিজ এবং ১টি সুইজ গেট আছে। তিন থেকে সাড়ে তিন ফিট খাল খনন করা হচ্ছে। ব্রিজের নিচে খনন হবে কীভাবে ? তাহলে কি ৬টি ব্রিজ ভেঙে নতুন করে কি ব্রিজ তৈরি হবে ? সব চেয়ে বড় কথা বর্ষমরসুমে বিলের পানি যে খাল দিয়ে চিত্রা নদীতে যাবে সে চিত্রা নদী এখন মৃত প্রায়। চিত্রা নদী খনন না করে খাল খনন করা আর বরাদ্ধের টাকা জলে ফেলা সমান কথা। নিচের পানি তো আর ওপরে যাবে না। বরং খাল খননের ফলে চিত্রার পানি খাল দিয়ে কামরির বিলে ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাল খননের ফলে জনগণের কোনো উপকার না হলেও কতিপয় ব্যক্তি লাভবান হবে। এমন প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি টাকা হরিলুট ছাড়া আর কিছুই না। তারপরও যে সমিতির নামে অর্থবরাদ্দ হয়েছে সে সমিতির ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া দরকার। কারা এর সদস্য। এটা একটি পারিবারিক সমিতি বলে আমারা জানি। এ ব্যাপারে সমিতির সভাপতি আরিফ বলেন, কোথায় আছেন বলেন, দেখা করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াশীমুল বারী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই মোবাইলে খাল খনন বন্ধ রাখতে বলেছি। বিষয়টি সরেজমিনে দেখার জন্য গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ছিলেন সদর উপজেলা প্রকৌশলী, অ্যাসিল্যা- ও তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন।