উদ্ভাবনে চুয়াডাঙ্গাতেও চমক!

জীবন সহজ করতে সকলেই খুঁজছে সটকাট

 

স্টাফ রিপোর্টার: আবেদনের সংক্ষিপ্ত রূপ ‘আবে’ বললে কি চলে? অথচ অ্যাপলিকেশনকে সংক্ষিপ্ত করে এখন ‘অ্যাপ’ বললে বিশ্ব জুড়ে বোঝে। কালের বিবর্তনে যেমন বদলে যাচ্ছে আবহওয়া, তেমনই দৈনিন্দন জীবনও সহজ করতে মানুষ যেনো কিছুতেই খুঁজে নিচ্ছে সটকাট। এইতো সেদিন ছিলো সেলফোন। ক’দিনের মধ্যেই মানুষের হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছে স্মার্টফোন। কী নেই এতে?

তথ্যপ্রযুক্তি শুধু বিশ্বটাকে একটি গ্রামেই রূপান্তর করেনি। বন্ধুর চেয়েও আপন হয়ে সব সময় সঙ্গ দেয়ার পাশাপাশি দৈনিন্দন জীবনের চাহিদা মেটাতে শুরু করেছে তথ্য প্রযুক্তিতে যুক্ত হওয়া স্মার্টফোন। কোথায় বিপদে পড়েছেন? দুষ্কৃতীর কবলে? বাটন টিপলেই নিকটস্থ পুলিশের কাছে পৌছে যাবে আপনার অবস্থানসহ বিপদের খবর। আর এটা স্মার্টফোনে অ্যান্ড্রয়েড ভারসনে কীভাবে কাজ করবে তা উদ্ভাবন করেছেন চুয়াডাঙ্গারই ফার্স্ট ক্যাপিট্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্র। আর ওয়েবের কোন সাইটে ঢুকতে লেখার ঝামেলা? সে থেকে রেহাই দিতে প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক অ্যাপ প্রস্তুতের তো হিড়াহিড়ি। দৈনিক মাথাভাঙ্গার অ্যাপ ইতোমধ্যেই তৈরি করে চমক দেখিয়েছে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুলের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্র সাদরিল আমিন শ্রেষ্ঠ। তার উদ্ভাবিত অ্যাপ দৈনিক মাথাভাঙ্গার বিভাগওয়ারি পেজ ওপেনের পাশাপাশি সরাসরি সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়া অন্যদের অ্যাপে যা নেই, ওর তাতে চমক লাগানো সংযোজন। সেই সাথে ওয়েব ডেভেলপে নতুন চিন্তার সংমিশ্রণ বিশেষজ্ঞদের চমকে দিলেও তা নিয়ে ব্যস্ত হতে পিতা-মাতার বরণ। কারণ লেখাপড়ার বিঘ্নের শঙ্কা। আর ফার্স্ট ক্যাপিট্যাল ইউনিভার্সিটির দু ছাত্র মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর বাবুপুরের সাদ্দাম এবং মেহেরপুর গাংনীর মঠমুড়া সিঁন্দুরকৌটার মিজানুর রহমান? দেশজুড়ে চমকে দেয়ার মতো সফটওয়্যার উদ্ভাবন করে চমকে দিয়েছেন। এদের নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলও প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছে সম্প্রতি।

এ দুজন তাদের প্রজেক্ট সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, আমাদের প্রজেক্টের নাম- অপরাধ দমনমূলক নিরাপত্তা দানকারী অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ‘সেলফ প্রোটেক্ট’। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ব্যবহার উপযোগী উদ্ভাবিত ‘সেলফ প্রটেক্ট’ অ্যাপসের মাধ্যমে দেশের যেকোনো জায়াগায় যেকোনো ব্যক্তিকে যেকোনো সময় অপরাধীর আক্রমণ থেকে রক্ষা ও সাহায্য করা। দেশে সন্ত্রাস ও নাশকতারোধ করা। দেশে অপহরণ, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধ করা। অ্যাপস মূলত কাজ করবে এটি ভিকটিমের মোবাইলফোনের বাটন চাপার মাধ্যমে নিকটস্থ প্রশাসন দপ্তরে বার্তা বা নোটিফিকেশন প্রেরণ করবে। এ অ্যাপস’র মাধ্যমে ভিকটিমের অবস্থানরত জায়গার সম্ভাব্য সঠিক স্থান গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের (জিপিএস) মাধ্যমে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশসহ জানা যাবে। যার মাধ্যমে ভিকটিমকে সহজেই উদ্ধার ও সাহায্য করা সম্ভব হবে। এ অ্যাপসটির সেবা পাওয়ার জন্য অ্যাপসটিকে সবসময় ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান রাখতে হবে। তাহলে যেকোনো সময় বিপদে পড়লে শুধুমাত্র ব্যাক বাটন একটু দীর্ঘ সময় চেপে রাখলে ভিকটিমের অবস্থান জিপিএস’র মাধ্যমে ট্র্যাক করে সবচেয়ে নিকটস্থ প্রশাসন দপ্তরের সার্ভারে ভিকটিমের অবস্থানসহ প্রয়োজনীয় তথ্য নোটফিকেশন আকারে পৌছে যাবে, যা আরও সহজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর বোঝার জন্য বার্তাটি গুগল ম্যাপসহ দেখাবে, অপরাধ সংঘটিত ওই স্থানটি। অ্যাপসটির সেটিংস মেন্যুতে এনাবল ও ডিজএবল দুটি অপশন রাখা হয়েছে যাতে অ্যাপসটির অপব্যবহার রোধ করা যায়।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাহায্য দরকার। এছাড়াও প্রয়োজন এসএমএস সার্ভিস প্রদানকারী অপারেটরের সাহায্য। একটা ডেডিকেটেড সার্ভারও লাগবে বলে জানিয়েছেন উদ্ভাবক দুজন।