ইফতারের দ্বিতীয় দিন : গাংনীতে কলা ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো

 

মাজেদুল হক মানিক: রমজান মাস তাই মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে হরেক রকমের কলার পসরা বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দেশিয় জাতের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল নানান জাতের কলার দেখা মিলছে। ইফতারিতের কলার কদর থাকায় দামও বেড়েছে। দুই দিনে ব্যাপক পরিমাণ কলা বিক্রি করতে পারায় এবার ভাল লাভের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। গাংনী উপজেলা শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকার জেলা পরিষদ মার্কেটের আশেপাশে প্রতিদিনিই কলা বিক্রির দৃশ্য চোখে পড়ে। এছাড়াও হাটবোয়ালিয়া রোড, কাথুলী মোড়সহ শহরের কয়েকটি স্থানে সাপ্তাহিক হাটের দিন ছাড়াও কলা পাওয়া যায়। রোজার শুরুতেই এবার কলার ব্যাপক চাহিদা বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে রোজার আগের চেয়ে এখন দাম বেশ চড়া। সর্বোচ্চ ২৫ টাকা পর্যন্ত হালি বিক্রি হচ্ছে। দাম নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষ থাকলেও ইফতারির জন্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে কলা ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্ষেত থেকেই বেশি দরে কিনতে হচ্ছে।

গাংনী বাজারের কলাব্যবসায়ী ঝিনেরপুর পাড়ার বাসিন্দা ইন্নাত আলী জানান, সাগর কলা প্রতি হালি (৪টি) ১০-২০ টাকা, সবরী কলা ১৬-২৫টাকা ও ঠটে কলা ১০-১৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। একেক জন ব্যবসায়ী কয়েক শ’ হালি বিক্রি করেছেন। সারা বছর কলার ব্যবসায় তেমন লাভ না থাকায় রোজার সময় পুষিয়ে যাচ্ছে। বিক্রি বেশি তাই ভাল লাভের আশা করছেন তারা।

গতকাল ইফতারির বাজার ঘুরে দেখা যায়, কলার বিক্রির স্থানে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্যণীয়। রোজদারদের ইফতারির পরম খাদ্য পণ্য হিসেবে কলা ক্রয় করছেন অনেকেই। এদিকে কেমিক্যাল ও বিষমুক্ত কলা নিয়ে ক্রেতাভোক্তাদের মাঝে সংশয় রয়েছে। ইফতারির বাড়তি চাহিদা মেটাতে ব্যবসায়ীরা কেমিক্যাল দিয়ে কলা পাকাচ্ছে বলে অভিযোগে কয়েকজন ক্রেতার। সিয়াম-সাধনার এ মাসে পরিপক্ক ও বিষমুক্ত কলা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন ক্রেতারা। তবে কয়েকজন কলা ব্যবসায়ীর দাবি, কেমিক্যাল নয় ধূয়া দিয়ে কলা পাকানো হচ্ছে। এতে শারীরিক কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

সবজি উৎপাদনখ্যাত মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন মাঠে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক হারে কলা চাষ হচ্ছে। স্থানীয় সাগর কলার পাশাপাশি গত দুই বছর ধরে সবরী কলা আবাদ হচ্ছে। এক সময় ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা থেকে সবরী কলার আনা হলেও এখন জেলার উৎপাদিত কলায় চাহিদা মিটছে। জেলার চাহিদা পূরুণ করে প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে মেহেরপুর জেলায় উৎপাদিত কলা।

পূর্ব মালসাদহ গ্রামের আব্দুল হান্নান দুই বিঘা জমিতে সবরী কলার আবাদ করেছেন। রমজান মাসের আগে থেকেই তিনি বিক্রি শুরু করেছেন। আব্দুল হান্নান জানান, সারা বছর যা বিক্রি হয়েছে তাতে তেমন লাভ হয়নি। রোজার দুই দিনে যে বিক্রি তা অব্যহত থাকলে সারা বছর চাষের লোকসান পোষানো সম্ভব হবে। ক্ষেত থেকে প্রতিটি সবরী কলার কাদি বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। বাজার থেকে ক্রয়ের পাশাপাশি অনেক ভোক্তা ক্ষেত থেকে কাদি কিনছেন।