ইউপি চেয়ারম্যান মিল্টন জেলহাজতে : জামায়াতের মুক্তি দাবি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানা পুলিশের নাশকতাবিরোধী অভিযান : আগ্নেয়াস্ত্র ও জেহাদিপুস্তক লিফলেট উদ্ধার

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক শরীফুল আলম মিল্টনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। তাকে গতপরশু সন্ধ্যায় দামুড়হুদা গুলশানপাড়াস্থ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, তার বাড়ি তল্লাশি করে ২টি শাটারগান, ৪টি ককটেল, ৪ রাউন্ড গুলি, ৭টি জেহাদী বাইসহ শতাধিক লিফলেট উদ্ধার করা হয়। গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হলে শরীফুল আলম মিল্টনের সহযোগীরা সটকে পড়ে।

এদিকে গতকাল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আমির আনরুল হক মালক স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দামুড়হুদা উইনিয়ন জামায়তের আমির কলেজের কেমিস্টির প্রভাষক শরীফুল আলম মালিকের বাড়িতে যখন পুলিশ যায়, তখন তিনি মাগরিবের নামাজ আদায় করছিলেন। তাকে দামুড়হুদা থানার ওসি সিকদার মশিউর রহমান সালাম দিয়েছেন বলে ডেকে নিয়ে পুলিশ দল। অথচ এরপর অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করে পুলিশ। যা স্থানীয়রা জানার পর চমকে ওঠেন। কারণ যার বিরুদ্ধে মামলা দূরের কথা একটি জিডি পর্যন্ত নেই, তাকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার হলে স্থানীয়রা দেখলো না কেন? সরকারবিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানির করার জন্য পছন্দমতো অনুগত স্বার্থন্বেষী কিছু পুলিশ অফিসার দিয়ে এ ধরনের কাজ করছে। ইন্সপেক্টর শিকদার মশিউর রহমান তাদেরই একজন বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সন্ধ্যায় লোকজনের সামনে থেকে একজন জনপ্রতিনিধিকে খালি হাতে থানায় নেয়ার পর অস্ত্র উদ্ধারের অভিযোগ ওই ওসির পরিকল্পনারই অংশ বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া গ্রেফতারের পর ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার কথা বলা হলেও পরে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার করা কি ষড়যন্ত্রের বহির্প্রকাশ নয়? প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জামায়াতে ইসলামী নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মিল্টনের মুক্তির দাবিসহ তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

দামুড়হুদা থানা পুলিশের অভিযোগ, দামুড়হুদা উপজেলা সদর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রভাষক শরীফুল আলম মিল্টনকে রোববার সন্ধ্যায় তার গুলশানপড়াস্থ নিজ বাড়িতে সরকারবিরোধী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ২০/২২ জন দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গোপন বৈঠক করছে। এমন গোপন সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি সিকদার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ দল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গোপন বৈঠকে উপস্থিত থাকা ২০/২২ জন লোক পালিয়ে গেলেও মিল্টনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকালীন তার বাড়ি তল্লাশি করে ২টি শাটার গান, ৪টি ককটেল, ৪ রাউন্ড গুলি, ৭টি জোহদী বই ও শতাধিক লিফলেট উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আবু জাহের ভূইয়া বাদী হয়ে শরীফুল আলম মিল্টন,দামুড়হুদা উপজেলা জামায়াতের আমির নায়েব আলী, দর্শনা পৌর জামায়াতের আমির নবনির্বাচিত দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৭/১৮ জনের নামে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি সিকদার মশিউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত মিল্টনকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।