ইইউ উদ্বিগ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথের পর এবার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর কথা জানিয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। এ নির্বাচনে তারা কোনো পর্যবেক্ষকও পাঠাবেন না। তবে অধিক উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত হলে পরে এ প্রক্রিয়ায় জড়িত হতে প্রস্তুত তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন পসাকি এক বিবৃতিতে পরিষ্কার করে বলেছেন এ কথা। বিবৃতিতে তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রের প্রতি প্রতিশ্রুতি পালনের সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সামনে এটা বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে যা বাংলাদেশের মানুষের চোখে বিশ্বাসযোগ্য হয়। যুক্তরাষ্ট্র গভীর হতাশার সাথে বলছে যে, আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদের অর্ধেকের বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পন্থা বের করার জন্য বড় রাজনৈতিক দলগুলো এখনও কোনো সমঝোতায় পৌঁছেনি। এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র এ নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। জেন পসাকি বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণের বিষয়টিতে পুনরায় জড়িত হওয়ার জন্য প্রস্তুত। যদি অধিকতর উপযোগী পরিবেশে নির্বাচন হয় তাহলে এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। সব বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অব্যাহত আলোচনা চায় যুক্তরাষ্ট্র। এই সাথে তাদের এ প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে।

নিজের, দূতাবাসের এবং সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন প্রধান উইলিয়াম হানা। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে তিনি এ উদ্বেগের কথা জানান। একই সাথে ইইউ দূতাবাস, কূটনীতিকদের বাসভবনসহ পুরো কূটনৈতিক জোনে আরও নিরাপত্তা বাড়ানোর আহ্বান জানান। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র মতে, দুপুরে পররাষ্ট্র ভবনে যান রাষ্ট্রদূত। সেখানে রাষ্ট্রাচার ও ইউরোপ অনুবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী ওই বৈঠকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ’র অবস্থান ব্যাখ্যা করেন রাষ্ট্রদূত। এ সময় গত ১৮ ডিসেম্বর নিরাপত্তা বেষ্টনী ডিঙিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও, দূতাবাসের কাছাকাছি অবস্থান করে উত্তেজিত কর্মীদের জুতাসহ বিভিন্ন বস্তু নিক্ষেপ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং ১৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় দূতাবাসটি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক জোনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলশান-২ গোলচত্বরে গণজাগরণ মঞ্চের জমায়েত-মিছিল ও তাদের ঠেকাতে পুলিশের লাঠিচার্জের বিষয়গুলো আলোচনায় আসে। রাষ্ট্রদূতের তরফে সুনির্দিষ্টভাবে ওই ঘটনা দুটির উল্লেখ করা হয়। একই সাথে সাম্প্রতিক সময়ে কূটনৈতিক জোনে মিছিল, মানববন্ধন ও রাজনৈতিক কর্মসূচি বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নিজের, দূতাবাসের ও অন্য সহকর্মীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর অনুরোধ জানান। পররাষ্ট্র দফতর কর্মকর্তাদের তরফে অতীতের ঘটনাগুলো এবং সরকারের তাৎক্ষণিক অ্যাকশনের বিষয় জানিয়ে রাষ্ট্রদূতকে অভয় দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় গত শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।