আহতদের আক্ষেপ : পুলিশ উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই নিলো মামলা!

 

জীবননগর ব্যুরো: একই পরিবারের ৪ জনের মাথা লক্ষ্য করে একের পর এক মাংস কাটা ডাসা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হলেও আহতদের পক্ষে থানায় মামলা করতে গেলেও তাদের মামলা রেকর্ড করা হয়নি, উল্টো তাদের বিরুদ্ধে হামলাকারীদের পক্ষে দীর্ঘ ৮ দিন পর দায়ের করা মামলাটি পুলিশ রেকর্ড করেছে। এ ঘটনায় চরম আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন জীবননগর উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শহিদুল ইসলাম। হামলার এ ঘটনাটি ঘটে গত ২৩ জুন রাতে জীবননগর উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামে।

অভিযোগে প্রকাশ, মোক্তারপুর গ্রামে অবস্থিত কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন কিছু টেবিল-চেয়ার ও দরজা গত বছরের রমজান মাসের গভীর রাতে সরানো হচ্ছিলো। বাজারের ওপর দিয়ে যাওয়াকালে একটি দরজা পড়ে গেলে গভীর রাতে দরজার বিকট শব্দে বাজারে দোকানে ঘুমিয়ে থাকা ব্যবসায়ীরা জেগে ওঠেন এবং বাহিরে বেরিয়ে দেখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুন পুরাতন এসব আসবাবপত্র তার বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা এ সময় প্রতিবাদও করেন। দীর্ঘ ১ বছর পর গত ২৩ জুন রাতে এ নিয়ে ব্যবসায়ী মিলুর সাথে প্রধান শিক্ষক মামুনের বচসা শুরু হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মামুন তার ভাই ফারুক হোসেন, আফছার আলীর ছেলে মিঠু ও রাজু এবং সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইবুলকে সাথে নিয়ে হামলা চালিয়ে মাংস কাটা ডাসা দিয়ে কুপিয়ে মিলু ও তার দুই ভাই শহিদুল ইসলাম ও মশিয়ার রহমান এবং ভাতিজা রাজাকে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় মিলুর তাসকিন ট্রেডার্সে হামলা চালিয়ে ক্যাশ বাক্স ভেঙে টাকা ও মালামাল লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে মিলুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার বৃদ্ধ মাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। হামলা করা হয় দাউদ মেম্বারের বাড়িতেও। করা হয় ভাংচুর। এ হামলায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়াকালে রাস্তার মধ্যে একই গ্রুপের অপর শিক্ষক মৃত আবু তালেবের ছেলে হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে রাস্তার মধ্যে আহতদের আটক করে দ্বিতয়ী দফায় মারপিট করা হয়। এ সময় তারা হামলার চালিয়ে চায়ের দোকানে বসে থাকা আব্দুল আজিজের ছেলে জহিরুল ইসলাম বুদো ও আহত মিলুর ভাগ্নে কলম হোসেনের স্ত্রী রুমি খাতুনকেও পিটিয়ে আহত করে। মারপিট কালে ওহিদুল ইসলাম নামে অপর আরও একজন আহত হয়। আহত সকলকে উদ্ধার করে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে রাতেই এসআই সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও হাসপাতালে ভর্তি আহতদের নিকট হামলার ঘটনা শোনেন। আহত শহিদুল ইসলাম পরের দিন থানাতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন; কিন্তু পুলিশ তার অভিযোগ আমলে নেয়নি উপরন্তু দীর্ঘ ৮ দিন ১ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক মামুনের ভাই ফারুক হোসেনের দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এমন ঘটনায় আহতদের পক্ষ হতে আক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জীবননগর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওসি (তদন্ত) মামলাটি রেকর্ড করেছেন এবং নিজেই মামলাটি তদন্তের ভার নিয়েছেন।