আসামি ৪ : শাহানারা হত্যামামলার রায় আগামীকাল

পোষা কুকুর হত্যার প্রতিবাদ করায় নফরকান্দী গ্রামে খুন হন গৃহকন্যা

 

নফরকান্দী থেকে ফিরে আলম আশরাফ: চুয়াডাঙ্গার নফরকান্দী গ্রামের শাহানারা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হতে পারে আগামীকাল সোমবার। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। শাহানারার বড় ছেলে মেহেদী হাসান রনি আশা করে তার মায়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। এ আশায় তার সন্তানেরা বুক বেঁধে আছে। ২০০৯ সালে কুকুর হত্যার প্রতিবাদ করতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন বাঁশ দিয়ে মাথায় মেরে শাহানারাকেও হত্যা করে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের নফরকান্দি গ্রামের মালিতাপাড়ার মৃত আত্তাব শেখের বাড়ির একটি পোষা কুকুর। নাম ছিলো পুষি। পোষা কুকুর পুষি ২০০৯ সালের ১৫ মে শুক্রবার পাশের ইকবাল শেখ ওরফে ছোট বুড়োর বাড়িতে গেলে তার ছেলে মিলন বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে কুকুরটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আত্তাব শেখের মেয়ে শাহানারা খাতুন প্রতিবাদ করেন। সাথে সাথে মিলনের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে সে শাহানারা খাতুনের মাথায় আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান শাহানারা খাতুন (৩৫)। শাহানারার স্বামী পুলিশ সদস্য খালেক খান শুক্রবারেই বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামিরা হলো ইকবাল শেখ ওরফে ছোট বুড়োর ছেলে মিলন, খেজুরা গ্রামের পুটে খন্দকারের ছেলে ছোট বুড়োর জামাই আহাদ আলী, পটল শেখের ছেলে মিরাজুল ও আজিজুল। আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় আদালত ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ২৯ জানুয়ারি এ মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন আদালত। সে হিসেবে আগামীকাল ১০ ফেব্রুয়ারি শাহানারা খাতুন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হতে পারে।

গতকাল শনিবার নফরকান্দী গ্রামে শাহানারার পিতার বাড়িতে গেলে কাঁদতে কাঁদতে তার মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী নুরে সুলতানা মিতু বলে, আমাদেরকে যারা মা হারা করেছে তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়। আর যাতে এভাবে কারো এতিম না হতে হয়। শাহানারার বোন ময়না খাতুন বলেন, আমার বোনকে যারা মেরে ফেলেছে, তাদের এমন শাস্তি হওয়া দরকার যাতে তার আত্মা শান্তি পায়।