আসন্নআইনজীবী অন্তর্ভুক্তিপরীক্ষায় ১০ হাজার ডিগ্রিধারীর অংশগ্রহণ অনিশ্চিত

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: আসন্নআইনজীবী অন্তর্ভুক্তির (এনরোলমেন্ট) পরীক্ষায় বিভিন্ন বেসরকারিবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার স্নাতক ডিগ্রিধারীর অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়েপড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্য,ভুয়া সনদ প্রদান,একাধিকক্যাম্পাস পরিচালনা,অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে তাদের এই পরীক্ষাররেজিস্ট্রেশন ফরম দেয়া হচ্ছে না। প্রায় ছয় মাস ধরে ফরম বিতরণ বন্ধ রেখেছেবাংলাদেশ বার কাউন্সিল।জানতে চাইলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যালএডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাড. গোলাম মোস্তফা সাংবাদিদের বলেন,যারারেজিস্ট্রেশন ফরম ওঠাতে পারেননি তারা এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার ক্ষেত্রেবিপাকে পড়লেও পড়তে পারেন। তবে যারা ফরম ওঠাতে পেরেছেন তাদের ক্ষেত্রে কোনোসমস্যা হবে না। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বার কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হবে।কাউন্সিল সভা থেকেই রেজিস্ট্রেশন ফরম ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবেবলেও জানান তিনি।তবে বার কাউন্সিলের অন্য আরেকটি সূত্রে জানা গেছে,যারা ফরম ওঠাতে পেরেছেন এবং যারা ফরম ওঠাতে পারেননি তাদের প্রায় সবারইপরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ,যারা ফরম তুলেছেন তাদের বেশিরভাগেরই ফরম জমা নেয়া হয়নি। আর যারা ডাকযোগে ফরম পূরণ করে পাঠিয়েছেন কেবলতাদেরটাই গ্রহণ করা হয়েছে। যদি এখন থেকে ফরম জমা নেয়া হয়,তারপরও পরীক্ষাদেয়ার জন্য বিধান অনুযায়ী কমপক্ষে ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে আবেদনকারীকে।রেজিস্ট্রেশন ফরম জমা দেয়ার পর ছয় মাস প্রত্যেক ডিগ্রিধারীকে কোনো জ্যেষ্ঠআইনজীবীর অধীনে শিক্ষানবিস হিসেবে কাজ করা বাধ্যতামূলক। সেই অনুযায়ীজানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির আগে তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তুপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে।বিদ্যমানপরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বেসরকারিবিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ডিগ্রিধারীরা। জানতে চাওয়া হলে স্টামফোর্ডইউনিভার্সিটি থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রিধারী ইসমাইল হোসেন বলেন,বাবা-মা অনেক টাকা খরচ করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। কিন্তু গুটিকয়েক দুর্নীতিবাজবিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আমাদের কেন ভোগান্তি পোয়াতে হবে?বার কাউন্সিলআমাদের কেন এনরোলমেন্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে? দেশের৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৩৮টিতে রয়েছে আইন বিভাগ। এসববিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ১০ হাজার ডিগ্রিধারী বার কাউন্সিলে পরীক্ষা দেয়ারঅপেক্ষায় রয়েছেন। এছাড়াও আইনে অধ্যায়ন করছেন আরও প্রায় ৩০ হাজারশিক্ষার্থী।২৮ মে বার কাউন্সিল এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রতিটিবেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২,১৩ ও ১৪ সালে আইনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারীছাত্রছাত্রীদের তালিকা আহ্বান করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়তাদের তালিকা পাঠায়।সূত্র মতে,এ তালিকা যাচাই-বাছাই করে বারকাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটি দারুল এহসান,প্রাইম,অতীশ দীপঙ্করবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,ইবাইস,ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল,আমেরিকা-বাংলাদেশসহ (আমবান) বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিহ্নিত করে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব,অবৈধভাবে একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা,অধিক ভর্তিসহ ৬-৭টি বিষয়ে ব্যাখ্যাচাওয়ার জন্য সুপারিশ করে। এই সুপারিশ বার কাউন্সিলে অনুমোদনের পরইসংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।
বারকাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফাবলেন,গণবিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করে দেখাগেছে,৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা সঠিক রয়েছে। তবে বাকি সাতটির ক্ষেত্রেদেখা গেছে,ভর্তির অনুমোদন রয়েছে ৫০ জনের,কিন্তু তারা ভর্তি করেছে এক থেকেদেড় হাজার। এ জন্য সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতেপারিনি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে বার কাউন্সিল সভায় সিদ্ধান্ত নেয়াহবে।