আলমডাঙ্গা বানিনাথপুরের পুকুর পাহারাদার অপহরণ ঘটনার নাটকীয় অবসান

 

৭৬ ণ্টার মাথায় অপহৃত মিললো গ্রামের গোরস্তানে!

কেএ মান্নান: আলমডাঙ্গার বানিনাথপুরের নাইটগার্ড যুবক দেলবার (৩৬) অপহরণ ঘটনার নাটকীয় অবসান ঘটেছে। অপহরকচক্র তাকে অপহরণের পর ৭৬ ঘন্টা অজ্ঞাত ডেরায় বন্দি রেখে অবশেষে মুক্তি দিয়েছে। অপহৃতকে ফেরাতে মুক্তিপণ গুনতে হয়েছে কি-না এ ব্যাপারে পরিবার মুখ খোলেনি। তবে এ অপহরণ ঘটনা নানান রহস্যের জট বেধেছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নের বানিনাথপুর গ্রামের দরিদ্র মকবুল হোসের ছেলে যুবক দেলবার হোসেন। সে পাশ্ববর্তী মধুপুর গ্রামের নবীছদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মাছচাষি বাদল অর রশীদের (৪০) পুকুরের মাছ পাহারাদার (নাইটগার্ড)। গত রোববার রাত ৮টার দিকে পুকুর পাহারার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরদিন সকালে বাড়ি না ফেরায় শুরু হয় খোঁজাখুজি। খোঁজাখুজি করে না পেয়ে পরিবার ও স্বজনদের মাঝে অজানা শঙ্কা ভর করতে থাকে। এ ব্যাপারে চাচাতো ভাই আবু বক্কর পরদিন সোমবার ১৩ জুন সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা থানায় একটি জিডি করেন। পরিবার দাবি করতে থাকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে। যুবক দেলবার উধাও কেউ কেউ এটা মাছচাষি বাদল অর রশীদের প্রতিপক্ষ ঘায়েলের কুটকৌশল বলে দাবি করতে থাকে। অপহরণ হলেতো পক্ষ বিশেষের দায় শিকার ও মুক্তিপণ দাবির রেওয়াজ রেয়েছে। কিন্তু এব্যাপারে দেলবারের পরিবার বরাবরই বলেছে খোঁজ মিলছে না বা কোনো প্রকার মুক্তিপণ ও দাবি করেনি কোনো পক্ষ। তবে কেন এ লাপাত্তা ঘটনা? তবে দেলবার দীর্ঘ ৭৬ ঘণ্টা পর অসুস্থ শরীরে ফিরেছে স্বজনদের মাঝে। নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের পাশে গোরস্তান ময়দানে সন্ত্রাসীচক্র তাকে বুধবার দিনগত মধ্যরাত ১২টার দিকে ফেলে গেছে।

চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে তিনি জানিয়েছে, গত রোববার বাড়ি থেকে পুকুর পাহারায় বের হয়ে তিনি সন্ত্রাসীচক্রের কবলে পড়েন। জিকে ১১জি সেচখালের রাস্তা থেকে তাকে ৬/৭জনের একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে বন্দি করে রাখে। একরাত একটি বাড়িতে তারপর মাঠে পাটক্ষেতে চোখ ও হাতপিঠ মোড়া করে বেধে ফেলে রাখা হয়। দিনে একবারই মাত্র শুকনা পাউরুটি খেঁতে দেয়া হয়। সর্বদা একজন পাহারা দিতো বলে সে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তিনি। বেঁধে রাখার কারণে চোখে কম দেখছেন। এ অপহরণের নেপথ্যে কি মুক্তিপণ নাকি অন্যকিছু? মুখে কুলুপ এটেছেন অপহৃত ও তার পরিবার।

প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলের ৩ তারিখ রাতে পাশ্ববর্তী মধুপুর গ্রামের মুকুলকে (৪৫) অজ্ঞাত অপহরকচক্র বাড়ি থেকে অপহরণ করে। মুক্তিপণ হিসেবে মোবাইলে তার স্বজনদের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করতে থাকে। জনশ্রুতি ছড়িয়ে পড়ে দরদাম দরকষাকষির পর্যায়ে দীর্ঘ ৫৬ ঘণ্টার মাথায় হীনদরিদ্র মুকুলকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয় অপহরকচক্রের বন্দিদশা থেকে।