আলমডাঙ্গা ফরিদপুরের বয়োবৃদ্ধ নিরীহ মুসল্লি হত্যামামলার এজাহারভুক্ত আসামি ওল্টু বিশ্বাস গ্রেফতার

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো:আলমডাঙ্গার ফরিদপুরের নিরীহ বয়োবৃদ্ধ মুসল্লি হত্যামামলার ৬নং আসামি ওল্টু বিশ্বাসকে গতকাল পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

জানাগেছে, ফরিদপুর স্কুলপাড়া জামে মসজিদের নাম পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বিরোধে আব্দুল জলিল হত্যামামলার আসামি একই গ্রামের মৃত মুক্তার আলী বিশ্বাসের ছেলে ওল্টু বিশ্বাস(৫৫)। গতকাল শনিবার রাতে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মনির উদ্দীন মোল্লা ও এসআই জুয়েল সঙ্গীয় ফোর্সসহ তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। গতকাল তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আলমডাঙ্গা উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের স্কুলপাড়ার মৃত রায়হান আলী মণ্ডল নিজ জমিতে গ্রামের মুসল্লিদের সহযোগিতায় ১৯৭৯ সালে ফরিদপুর স্কুলপাড়া জামে মসজিদটি নির্মাণ করেন। দীর্ঘ ৩৩ বছর মসজিদটি ওই একই নামে চলে আসছে। সম্প্রতি ওই গ্রামের কিছু মানুষের বোধোদয় ঘটে যে, মসজিদটি শুধু স্কুলপাড়ার নয়, সমস্ত গ্রামের। শুধু স্কুলপাড়া জামে মসজিদ হলে অন্যান্য পাড়ার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। বিশেষ করে গ্রামে নেতৃত্বদানকারী বিশ্বাস ও জোয়ার্দার বংশের হোমড়া চোমড়াদের। তারা মসজিদের নতুন করে একটা সার্বজনীন নাম দিতে আদাজল খেয়ে লাগলেন। ঠিক করলেন মসজিদের নতুন নাম দেবেন-ফরিদপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। কিন্তু তাদের এ খায়েশে বাঁধ সাধলেন স্কুলপাড়াবাসীর সাথে সাধারণ গ্রামবাসী। স্কুলপাড়ার মৃত রায়হান মণ্ডল নিজ জমিতে এ পাড়ার মানুষের সহযোগিতায় এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। তার সহোদর মসজিদের নামে মাঠে জমি দিয়েছেন। তাদের দেয়া নাম পরিবর্তন করলে তাদের অপমান করা হবে। এমনকি স্কুলপাড়াকেও অপমান করা হবে। তারা তা হতে দিতে নারাজ। বেশ কিছুদিন ধরে এ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই মাঝে গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা মসজিদে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাগবিতণ্ডা শুরু হলে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই তা শেষ হয়। সাধারণ মুসল্লির বেশিরভাগ ঘরে ফিরে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, কয়েকজনের সাথে সবশেষে মসজিদের ইমাম মসজিদ ছেড়ে বের হলে নাম পরিবর্তনের পক্ষের শক্তির নেতা ওল্টু বিশ্বাস ইমামের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। ইমামকে রক্ষা করতে ছুটে যান ওই গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক মুসল্লি আব্দুল জলিল। ওই সময় ওল্টু বিশ্বাসের ছেলে মিশর ও জয়নাল মেম্বারের ছেলে নয়ন ক্ষিপ্ত হয়ে মাথায়, কপালে ও চোখের নিচে ইট দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে।

গ্রামের অনেকে অভিযোগ তুলে বলেছেন, ওল্টু বিশ্বাস পূর্বে মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। বর্তমান টার্মে তাকে সভাপতি করা হয়নি। ওই ব্যাপারে তিনি ইমামসহ অনেকের ওপর ক্ষুব্ধ। গত শুক্রবার ওই বন্য ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটেছে জঘন্য এ হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে।

এ ব্যাপারে ওই রাতেই আলমডাঙ্গা থানায় নিহতের ছেলে আকুল বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। আটক ওল্টু বিশ্বাস এজাহারভূক্ত ৬নং আসামি।