আলমডাঙ্গা পশুহাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম : ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অসহায় পরিদর্শক ফার্ম

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা উপজেলা পশুহাসপাতাল নবনির্মিত ভবনের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভবনের প্রথম তলার ঢালাইয়ের ছাদ থেকে অনবরত পানি পড়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনতার ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা প্রাণিসম্পদ অফিসের দ্বিতল ভবন নির্মাণের প্রায় ৯২ লাখ টাকার কাজটি পায় খুলনার টুটপাড়ার মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স। অভিযোগ উঠেছে, কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার অনুপযোগী নিম্নমানের খোয়া এনে ভর্তি করে রাখে। আনতে থাকে দুই ও তিন নম্বর ইট। এসব খোয়া ও ইট দিয়েই ভবনের কাজ শুরু করে। কাজের প্রথমদিকে প্রাণিসম্পদ অফিসার শামীমুজ্জামান নিজে ও তার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাহারায় বসিয়ে কাজের তদারকি শুরু করেন। দুই ও তিন নম্বর ইটের চালান ফেরতও পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির অপকৌশলে পাহারায় থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাল ছেড়ে দেন। এর আগে তদারকি প্রতিষ্ঠান শহিদুল্লাহ অ্যাসোসিয়েটসের এক প্রকৌশলী ঠিকাদারের কাজের ঘাপলা ঠেকাতে না পেরে নিজেই চলে যান। পরে কাজের তদারকি করতে আসেন একই তদারকি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী জোসেফ। তিনিও এখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অপ্রতিরোধ্য দুনীতির কাছে পুরোপুরি অসহায়ত্ব বরণ করেছেন।

সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এক মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে এতো দুর্নীতি করে চলেছেন। ঠিকাদারের তোপের কাছে কাজের দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান শহিদুল্লাহ অ্যাসোসিয়েটসের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী জোসেফ ঠিকাদারের ক্রীড়ানকে পরিণত হয়েছেন।

ইতোমধ্যেই এ নির্মাণাধীন দ্বিতল ভবনের একতলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল ২৩ মার্চ নির্মাণ শ্রমিকরা ওই ছাদ ভিজিয়ে রাখতে ছাদে পানি ঢালেন। সে সময় ছাদের বিভিন্ন স্থান দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে এ সংবাদ দ্রুত শহরে ছড়ায়। অনেকেই ছুটে যান ঘটনাটি নিজ চোখে দেখতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা পেতে নির্মাণ শ্রমিকরা প্রতিটি পিলারের গোড়া খুঁড়ে নতুন করে বালি-সিমেন্ট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ভরাট করে। পরে নতুন করে বালি-সিমেন্ট দিয়ে ভরাটকৃত পিলারগুলো গোল করে কাঁদা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়, যাতে সেখানে ছাদ ভেজানো পানি আর যেতে না পারে। এ দৃশ্য দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। অনেকে মন্তব্য করে বলেছেন, যেনতেনভাবে কাজ সেরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে গেলে বিপাকে পড়বেন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখনই কাজ বন্ধ করে ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করার দাবি তুলেছেন তারা।