আলমডাঙ্গা জোড়গাছা গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার কুদ্দুসের অপচিকিৎসা পঙ্গু হয়ে পড়েছেন আনসার সদস্য জাহিদুল

 

অনিক সাইফুল: আলমডাঙ্গার জোড়গাছা গ্রামের দরিদ্র আনসার সদস্যকে ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসাপত্রের ওষুধ বাদ দিয়ে নিজের মতো করে চিকিৎসা দেয়ায় রোগী জাহিদুলের অবস্থার এই পরিণতি হয়। তিনি শয্যশায়ী হয়ে পড়লে তাকে নেয়া হয় রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে। সেখানকার ডাক্তার আঁতকে ওঠেন রোগীর অবস্থা দেখে। হাতুড়ে ডাক্তার আব্দুল কুদ্দুসের ভুল চিকিৎসার কারণে পঙ্গু হয়ে গেছেন আনসার সদস্য জাহিদুল। দরিদ্র্যের কষাঘাতে জীবন মৃত্যুর মাঝে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার। হাতুড়ে ডাক্তার আব্দুল কুদ্দুসের শাস্তির দাবি তুলেছে গ্রামবাসী।

আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামের মৃত হোসেন মণ্ডলের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস হাতুড়ে ডাক্তার। তার ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হয়েছেন গ্রামের মৃত মনছের আলী শাহেঁর ছেলে আনসার সদস্য জাহিদুল ইসলাম (৫০)। গত মাসে মাজায় ব্যথা অনুভর করেন তিনি। চিকিৎসা নিতে যান গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের কাছে। তিনি রোগীকে কয়েকটি ইনজেকশন দিলে অবস্থার অবনতি হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নেয়া হয় রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে। সেখান থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেন একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। বাড়িতে ফিরে সেই ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী আব্দুল কুদ্দুসের কাছে ওষুধ আনতে যান আনসার সদস্য জাহিদুল। ওই হাতুড়ে ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রের ওষুধ না দিয়ে নিজের মতগড়া ৭ দিনে মোট ৪২টি ইনজেকশন দেন জাহিদুলের শরীরে। অভিযোগে আরও জানা যায়, প্রতিদিন যে ইনজেকশন দেয়া হতো তার বোতলগুলো পায়খানার প্যানের মধ্যে ফেলে দিতে বলতেন হাতুড়ে ডাক্তার কুদ্দুস। কয়েকদিনের মধ্যে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়। ফলে তিনি শয্যশায়ী হয়ে পড়েন। পরে রাজশাহীতে ডাক্তারের কাছ গেলে অবস্থা বেগতিক দেখে কৌশলে এলাকা ছাড়েন হাতুড়ে ডাক্তার কদ্দুস।

গতকাল জোড়গাছা গ্রামে গেলে গ্রামবাসীসহ আনসার সদস্য জাহিদুলের পরিবার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, কুদ্দুসের ভুল চিকিৎসার কারণে একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। বাড়ির গরু ছাগল ঘটিবাটি বিক্রি করে তার চিকিৎসা চলছে। গ্রামবাসী ওই ডাক্তারের শাস্তির দাবি তুলেছে।

এ ব্যপারে অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুসের কাছে মোবাইলফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোলাক ৬০ এমজি, নিউটাক ও অরাডাকশন ইনজেকশন রাজশাহীর ডাক্তারের পরমর্শে দেয়া হয়েছে। একাডেমিক কোনো শিক্ষা আছে কি-না জানাতে চাইলে তিনি বলেন ২০০০ সালে এসএসসি পাস করে আলমডাঙ্গা থেকে এলএমএএফপি কোর্স করেছি। এছাড়া তিনি কোন প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।