আলমডাঙ্গায় মুদি দোকানি জসিম ও সিদ্দিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

আলমডাঙ্গায় সিনজেনটার নকল কীটনাশক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট-সিরাপ বিক্রির অভিযোগ

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: মুদি দোকানের আড়ালে নামি কোম্পানি সিনজেনটার চাহিদা সম্পন্ন পণ্যের নকল কীটনাশক, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, সিরাপ বিক্রির অভিযোগে আলমডাঙ্গার নিমতলার দোকানদার জসিম ও সিদ্দিককে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এলাকার প্রতারিত কৃষকদের অনুরোধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গতকাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার নিমতলা গ্রামের মৃত. মতলেব আলীর ছেলে জসিম আলী (৩২) ও একই গ্রামের মৃত. আইনাল হকের ছেলে সিদ্দিক আলী (৩৫) উভয়ই মুদিদোকানি। দীর্ঘদিন ধরে তারা কোনো লাইসেন্স ছাড়াই গ্রামের কৃষকদের মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন সিনজেনটা কোম্পানির ভিরতাকো নামক কীটনাশক বিক্রি করে আসছিলেন। এলাকার সিনজেনটা কোম্পানির রিটেইলারের বিক্রি মূল্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম দামে তারা বিক্রি করে আসছিলেন। কম দামে পেয়ে চাষিরা কোম্পানির রিটেইলারের নিকট থেকে না কিনে তাদের নিকট থেকে কেনেন। অপেক্ষাকৃত কম দামে নামি কোম্পানির কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করে কৃষকেরা প্রতারিত হয়েছেন। ওই কীটনাশক প্রয়োগের ফলে কোনো উপকার না হওয়ায় ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্তরা সিনজেন্টা কোম্পানির মাঠকর্মীকে বিষয়টি জানান। মাঠকর্মী আব্দুল কুদ্দুস ও ওমর ফারুক দু কৃষককে টাকা দিয়ে ২ মুদি দোকানির নিকট থেকে দু প্যাকেট ভিরতাকো কীটনাশক কৌশলে সংগ্রহ করেন। তারা প্রমাণ পান, কীটনাশক নকল। বিষয়টি এলাকার কৃষক পর্যায়ে জানাজানি হলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অভিযোগ করেন উপজেলা কৃষি অফিসারকে। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলমকে সাথে নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম হাসিবুল হাসান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা সিনজেনটা কোম্পানির সেলস প্রমোশন অফিসার আমিরুল আলম ও সেলস ইউনিট লিড শামীম আক্তার। সে সময় প্রথমে জসিম আলীর মুদি দোকানে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় সিনজেনটা কোম্পানির চাহিদাসম্পন্ন নকল ভিরতাকো নামক কীটনাশক। এ দোকান থেকে ১০ প্যাকেট নকল কীটনাশক উদ্ধার করা হয়। এসময় ওই মুদি দোকান থেকে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও সিরাপ উদ্ধার করা হয়। একই স্থানে সিদ্দিক আলীর মুদি দোকানে অভিযান চালিয়ে বিস্কুটের কার্টুন থেকে ১০ প্যাকেট নকল ভিরতাকো কীটনাশক উদ্ধার করা হয়। ওই দোকান থেকে নকল দস্তা সারও উদ্ধার করা হয়।

এ সময় অভিযুক্ত দু ব্যবসায়ী জানান, তারা চুয়াডাঙ্গার ফকিরপাড়ার অলিয়ারের নিকট থেকে মাত্র ৪০ টাকা করে ওই নকল কীটনাশক কিনে ১২০ টাকা করে বিক্রি করতো। শেষে নকল কীটনাশক বিক্রি করে কৃষককে প্রতারণা করার অভিযোগে দু মুদি ব্যবসায়ী জসিম আলীকে ৫ হাজার ও সিদ্দিক আলীকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ জরিমানা করেন। এছাড়া দু ব্যবসায়ী আর কোনো দিনও নকল কীটনাশক বিক্রি করবেন না মর্মে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট লিখিত মুচলেকা দিয়ে মুক্ত হন।