আলমডাঙ্গায় ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে গণধোলাই শেষে পুলিশে সোপর্দ : মানসিক অসুস্থতার পরিচয় নিশ্চিতের পর মুচলেকায় মুক্তি

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার ওয়াপদা কলোনিতে ছেলেধরা সন্দেহে হরিজন সম্প্রদায়ের এক যুবককে গণধোলাই শেষে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। পরে মানসিক রোগী নিশ্চিত হওয়ার পর অভিভাবকের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আলমডাঙ্গার ওয়াপদা কলোনিতে অবস্থিত আল ইকরা ক্যাডেট একাডেমির সামনে থেকে এক অপরিচিত যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে তাড়িয়ে ধরে গণপিটুনি দেয়া হয়। আল ইকরা ক্যাডেট একাডেমির সামনে অপেক্ষারত অভিভাবক ও স্থানীয়রা ওই সন্দেহভাজন যুবককে ধরে মারপিট করেন। পরে তাকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। মারপিটের শিকার যুবকের নাম পরেশ কুমার বাঁশফোড়। তার বাড়ি ঈশ্বরদী সুইপার কলোনিতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই যুবক আল ইকরা ক্যাডেট একাডেমির নার্সারি ক্লাসে পড়ুয়া এক শিশুকন্যাকে চকলেট ও গিফট দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছে ডেকে নেয়। পরে তার সাথে যেতে বলে। ওই যুবকের কথামত শিশুটি ক্লাস থেকে অসময়ে বের হয়ে অপরিচিত ব্যক্তির সাথে চলে যেতে দেখে বাইরে অবস্থানরত অনেকের সন্দেহ হয়। তারা যুবকটিকে থামতে বললে সে দৌঁড়ে পালাতে চেষ্টা করে। সে সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়া হয়। গণপিটুনি শেষে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হলে যুবকটির মানসিক অবস্থা নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সহযোগিতায় যুবকের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।
পরিবার ও ঈশ্বরদী থানা পুলিশসূত্রে জানা গেছে, আটককৃত যুবক এলাকার ভালো ক্রিকেটার। কিন্তু মাঝে মধ্যে সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে বর্তমানে পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যুবকটির পরিবারের পক্ষ থেকে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র থানায় হাজির করা হয়। পরে তার মানসিক অবস্থা নিশ্চিত হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে ওই যুবক আর কখনও আলমডাঙ্গায় আসবে না মর্মে তার বড় ভাই লিখিত মুচলেকা দিয়ে নিজ জিম্মায় মুক্ত করে বাড়ি ফেরেন।