আলমডাঙ্গার হারদী গ্রাম থেকে আবার তিনটি বোমা উদ্ধার : কিশোরদের গোলযোগ হলেই উদ্ধার হয় বোমা

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আবার আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী বাজারের পৃথক দুটি স্থান থেকে তিনটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশ হারদী বাজারের সেন্টুর দোকানের সামনে থেকে দুটি ও শুকুরের বাড়ির সামনে থেকে একটি বোমা উদ্ধার করেছে। উপজেলার ডেঞ্জার জোন হিসেবে পরিচিত হারদী গ্রামে হাত বাড়ালেই বোমা পাওয়া যায় এমন কথা এলাকায় বহুল প্রচারিত।

জানা গেছে, সকালে হারদী বাজারের মোটরসাইকেল মেকানিক যাদবপুর গ্রামের সোবহান আলীর ছেলে সেন্টুর দোকানের সামনে দুটি ও বাজারের মফিজ উদ্দিনের ছেলে শুকুর আলীর বাড়ির সামনে একটি বড় লাল টেপে মোড়ানো বস্তু দেখে এলাকাবাসী ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশকে অবহিত করে। সকাল ১০টার দিকে ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমা তিনটি উদ্ধার করে।

বেশ কিছু দিন পূর্বেই আলমডাঙ্গার হারদী গ্রামের থানাপাড়ার দেলোয়ার হোসেন বাবুর বাড়ি থেকে ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশ লাল টেপ দিয়ে জড়ানো একটি বোমা উদ্ধার করে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাবু তার ঘরের বারান্দায় বোমাটি পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীদের জানান। বিষয়টি ওসমানপুর-প্রাগপুর ফাঁড়ি পুলিশ জানতে পেরে তা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এছাড়া সম্প্রতি পুলিশ হারদী কলেজের সামনে থেকে স্বল্প বুদ্ধি সম্পন্ন এক ব্যক্তির নিকট থেকে একটি বোমা উদ্ধার করে।

এলাকাসূত্রে জানা গেছে, মোটরসাইকেল মেকানিক সেন্টুর ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে বাবুর সাথে কয়েকদিন পূর্বে হারদী গ্রামের কয়েকজন সহপাঠী কিশোরের বিরোধ বাধে। গ্রামবাসীর অনেকের ধারণা, কিশোরদের গোলযোগের সূত্র ধরেই বাজারে গতপরশু রাতে তিনটি বোমা রাখা হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া হারদী থানাপাড়ার দেলোয়ার হোসেন বাবুর বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত বোমার পেছনেও ওই গ্রামের দু দল কিশোরের গোলযোগকে দায়ী করেছে গ্রামবাসী।

গ্রামসূত্রে আরও জানা গেছে, হারদী গ্রাম থেকে মাঝে মধ্যেই বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। ইতঃপূর্বে হারদী কলেজের সামনে থেকে কয়েক দফা বোমা উদ্ধার, হারদী এমএস জোহা কলেজের মাঠ থেকে বোমা উদ্ধার, বোমা তৈরির সরমজাম উদ্ধার, বাংলাদেশ লোকপ্রশাসনের সাবেক পরিচালক ড. মতিয়ার রহমানের বাড়িসহ একাধিক বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। এক সময়ের জনযুদ্ধের বিভাগীয় সম্পাদকের বাড়ি হারদী গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রামে। সেই সূত্রে ওই এলাকায় উঠতি বয়সীদের হাতে হাতে বোমা বলে এলাকার একাধিক সূত্র জানিয়েছে। যাদবপুরের উঠতি বয়সিদের হাত থেকে হারদী এলাকার আধিপত্য নিজেদের আয়ত্বে রাখতে হারদী গ্রামের আরিফের নেতৃত্বে বেশ কিছু যুবক এক সময় অপরাধ জগতে পা বাড়ায়। আরিফ নিহত হওয়ার পরও সেই তৎপরতা থেমে থাকেনি। তার মৃত্যুর পর কিশোর বয়সীদের হাতে হাতে বোমা ছড়িয়েছে। হারদী এলাকায় এখন- হাত বাড়ালেই বোমা এ কথা মানুষের মুখে মুখে। কিশোর বয়সী তরুণদের গোলযোগ হলেই দেখা মেলে বোমার।