আলমডাঙ্গার তিয়রবিলার আওয়ামী লীগ কর্মী নজরুল খুনের ঘটনায় চুয়াডাঙ্গায় সংবাদ সম্মেলন

 

 

 

সাবেক চেয়ারম্যান লালসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ কর্মী ক্লিনিক ব্যবসায়ী নজরুল খুনের ঘটনায় তার স্ত্রী চম্পা খাতুন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন উপস্থিত ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি রাজনৈতিক খুন। আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ পুলিশের আশকারা ও মদদ পেয়েই এসব খুনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। নজরুলের স্ত্রী চম্পা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি তিয়রবিলার মৃত মকলেছুর রহমান মল্লিকের ছেলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তাফছির আহমেদ মল্লিক লাল।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্ত্রী চম্পা খাতুনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ। তাতে বলা হয় ‘৬ জুন দুপুরে আমার স্বামী নজরুল ইসলাম মোটরসাইকেলযোগে হরিণাকুণ্ডু থেকে আলমডাঙ্গার বনতিয়রবিলা গ্রামে বৌভাত অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সতীনের মামাতো ভাই আবদুল্লাহসহ এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও গুলি করে তাকে হত্যা করে। আবদুল্লাহ তার পথের কাঁটা সরাতেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’ চম্পা খাতুন আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপার মামলাটি ভিন্নখাতে নিতে আমার সাথে কোনো রকম যোগাযোগ না করেই প্রতিপক্ষের একজনকে দিয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি মনগড়া এজাহার দাখিল করিয়েছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় কোনো খুন খারাবি ছিল না। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে উসকে দিচ্ছেন। ফলে শান্ত চুয়াডাঙ্গা অশান্ত হয়ে উঠছে।’ তিনি বলেন ‘নজরুল খুনের আসামিদের আড়াল করতেই দূর সম্পর্কের এক চাচাকে বাড়ি থেকে তুলে এনে থানায় নজরুল খুনের মামলা করিয়েছেন। যা উদ্দেশ্যমূলক।’ সংবাদ সম্মেলনে নিহত নজরুলের স্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন তার শিশু সন্তান চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র রহিদ, দেড় মাসের শিশুপুত্র রোহান ও নজরুলের মা আনোয়ারা বেগম। সংবাদ সম্মেলন শেষে নজরুলের স্ত্রী চম্পা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ২২ জনের আসামিদের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন তিয়রবিলা গ্রামের মৃত মণ্টুর ছেলে মজনু, মৃত ঝড়ু মণ্ডলের ছেলে ওল্টু, মৃত বুলু মিয়ার ছেলে লাটিম মাস্টার ওরফে মজিবর, আলাল উদ্দিনের ছেলে সাঈদ, সাইনুদ্দিনের ছেলে মোমিন, কনেজ উদ্দিনের ছেলে লালন, মৃত তোরাব আলী মণ্ডলের ছেলে রবজেল, পাঞ্জু চৌধুরীর দু ছেলে আব্দুল মান্নান চৌধুরী ও চুন্টু চৌধুরী, নুরু মল্লিকের ছেলে মনোয়ার মল্লিক, ঘোলদাড়ি পাইকপাড়া গ্রামের লৎফর রহমানের ছেলে রকিবুল হাসান নান্না,  হাকিমপুর গ্রামের মৃত আইন উদ্দিন আইনালের ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনোয়ার ডাক্তার, গাজির  উদ্দিনের ছেলে মতিয়ার রহমান, খাসকররা গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে মোনায়েম হোসেন, নবীছদ্দিনের ছেলে রুহুল, মৃত আয়ুব আলীর ছেলে মোশারেফ হোসেন, হোসেনপুর গ্রামের (বর্তমানে কেরু অ্যাণ্ড কোং ব্যারাক দর্শনা চুয়াডাঙ্গা) শমসের আলীর ছেলে তোফাজ্জেল, আলম হোসেনের ছেলে উজ্জ্বল, তিয়রবিলার আকবর মেম্বারের ছেলে খোকন, জবেদ ফকিরের ছেলে মজিদ, মেহেরপুর জেলার ধূলসাপাড়া গ্রামের ফকির চাঁদের ছেলে আব্দুল্লাহসহ আরও ১০/১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম মামলাটি এজাহার হিসাবে গণ্য করার জন্য আলমডাঙ্গা থানাকে নির্দেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদির আইনজীবি তছিরুল আলম মালিক ডিউক ।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদউজ্জামান লিটু, আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র হাসান কাদির গনু, খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানসহ নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।