আরো দু-তিন দিন থাকছে তীব্র গরম

চুয়াডাঙ্গা রাঙ্গামাটি কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার: বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়তে থাকায় আরো দু-তিন দিন তীব্র গরম থাকবে। ফলে জনজীবনে ভোগান্তি বাড়বে। গত শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ থাকলেও রোববার চুয়াডাঙ্গা, রাঙামাটি, খুলনা ও কুষ্টিয়ায় তীব্র তাপপ্রবাহ হয়। এছাড়া রাজধানী ঢাকাতেও তাপপ্রবাহ বেড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ হবে। গতকাল রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রবাহিত হয়। এছাড়া ঢাকায় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রবাহিত হয়। কিন্তু গতপরশু রাঙামাটিতে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকায় ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গরম বাড়ছেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্তব্যরত আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা (ডিএফও) আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে সূর্যের তাপ। এছাড়া আকাশে কোনো মেঘের বলয় নেই। এতে তাপমাত্রার তীব্রতা বায়ুমণ্ডলে কোনো ধরনের বাধা না পেয়ে সরাসরি চলে আসে এবং গরমের তীব্রতা বাড়ে। এ গরম আরো দু-তিন দিন থাকবে। তিনি আরো বলেন, দু-তিন দিন পর দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে। আর বৃষ্টি হলে গরম কমে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজ তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে মেহেরপুর জেরার মানুষ তীব্র গরমে অতিষ্ঠ। এক অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যদিয়ে সময় পার করছেন মানুষ। চৈত্রের এ দাবদাহে কর্মজীবী মানুষের কষ্টের অন্ত নেই। প্রচণ্ড তাপদাহে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়েছে। রোগীরা ভিড় করছেন বিভিন্ন হাসপাতালে।

চুয়াডাঙ্গা আহবাওয়া অফিসসূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলে ১৯ এপ্রিল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার তা একটু কমে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ৪ এ। গতকাল তা আরো বেড়ে যায়। গ্রীষ্মের শুরু থেকেই কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গরমের তীব্রতা বেড়েছে। এতে সবচেয়ে অমানবিক পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষেরা।

রিকশাচালক রাইহান জানান, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে তারা রিকশা চালাতে পারছেন না। রাস্তায় কয়েকটি যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পরই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। কিছু দিন আগে দিন ৩শ থেকে ৪শ টাকা আয় করলেও এখন একশ টাকা জমছে না। ফলে পরিবার পরিজনদের নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। রাজমিস্ত্রী রাজ্জাক জানান, ভ্যাপসা গরমের তারা স্বস্তির সাথে কাজ করতে পারছেন না। বিশেষ করে দুপুরের সময় প্রচণ্ড রোদে কাজ না করে তাদের বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

হাসপাতালের ভর্তি রোগী দিঘীরপাড়ার বজলুর রহামান জানান, মাঠ থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত দু দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শিশুরাও গরমের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছে না। এখনও অনেক শিশু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।