আরও দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেক নাগরিকের ভোট দেয়া তাদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অধিকার। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে, তারা কাকে ভোট দেবে। তবে কে কাকে ভোট দিচ্ছে- এ সব বিবেচনা করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাবে না। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াটা সবার মৌলিক অধিকার। এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো রাজনীতি করিনি, করবোও না। মানুষকে সেবা থেকে বঞ্চিত করার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। জনগণের কল্যাণে আমরা রাজনীতি করি। ভবিষ্যত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী জাতি গড়তে সরকার কাজ করছে। উন্নত চিকিত্সাসেবা দেয়ার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরো দুটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। ভালোভাবে উন্নত সেবা দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগস্থ দেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনির্মিত দুটি আউটডোর কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ডিসেম্বরে এ আউটডোর কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। প্রায় চার বছরের মাথায় এসে তিনি এ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ।

চিকিত্সায় উত্কর্ষের প্রয়োজনে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল তত্কালীন পিজি হাসপাতালকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি স্বাধীন দেশে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না- এটা কীভাবে হয়?

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানতে পেরেছি- গবেষণাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউশনাল রিভিউ বোর্ড (আইআরবি) গঠন করা হয়েছে। আমি আশা করবো- চিকিত্সা গবেষণার ক্ষেত্রে আপনারা আরো মনযোগী হবেন।

সেনাবাহিনীর যে সব হাসপাতালে ৫০০ শয্যা রয়েছে, সেগুলোকে মেডিকেল কলেজ করা যাবে- জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সেনাবাহিনীকে বলে দিয়েছি- যেখানে ৫০০ বেডের হাসপাতাল আছে, সেখানে মেডিকেল কলেজ করতে পারবেন।

মেডিকেল কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অ্যাফিলিয়েটেড (অধিভুক্ত), তেমনি আমাদের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অ্যাফিলিয়েটেড হতে হবে। আমরা বিভিন্ন বিভাগীয় যে সব বিশ্ববিদ্যালয় করবো সেগুলোর সাথে এগুলো অ্যাফিলিয়েটেড থাকতে হবে, যাতে তাদের ডিগ্রিগুলো উচ্চমানের হয়। এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ আপনাদের তরফ থেকে আমরা চাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী কমলাপুরে রেল হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালে পরিণত করতে উদ্যোগ নিতে বলেন সংশ্লিষ্টদের। ঢাকাকে উত্তর ও দক্ষিণ জোনে ভাগ করে হাসপাতাল নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চালু করা ৬ হাজার কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দিয়েছিলো। এগুলো থাকলে মানুষ সেবা পাবে এবং তারা জানবে যে এগুলো আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে, আর তখন সকল ভোট আওয়ামী লীগ পেয়ে যাবে- এই ভেবে তারা কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। তাদের এ সিদ্ধান্ত ছিলো নিষ্ঠুর। তবে বর্তমান সরকার কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকগুলো পুনরায় চালু করেছে।