আমাকে বহিষ্কারের ক্ষমতা আওয়ামী লীগের নেই

 

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী দাবি করেছেন, তাকে বহিষ্কারের এখতিয়ার আওয়ামী লীগের নেই। নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে গতকাল রোববার দুপুরে এক চিঠিতে একথা বলেন, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। লতিফ সিদ্দিকী তার চিঠিতে দাবি করেন, আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি ভুল ছিলো।

তিনি আরো দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ভুল ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে তাকে সংসদের সদস্যপদ থেকে সরিয়ে দেয়া সঙ্গতিপূর্ণ হবে না। সেই সাথে নির্বাচন কমিশনকে শুনানি বিতর্কে না গিয়ে বিষয়টি স্পিকারের কাছে পাঠানোরও অনুরোধ করেন তিনি। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক চিঠিতে বলা হয়েছে, দল বহিষ্কার করায় তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন না।

গতকাল রোববার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর দেওয়া চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকী লেখেন, ধর্ম অবমাননার বানোয়াট ও ভিত্তিহীন যে অভিযোগ আনা হয়েছে আলোচনার স্বার্থে তা যদি ধরেও নেয়া হয় তাহলেও আওয়ামী লীগ থেকে সদস্যপদ বাতিল করার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় সংসদের নেই। কারণ আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে বক্তব্য দিয়েছি বলে বিবেচনার সুযোগ নেই। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে নেয়া হয়েছে এবং সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুযায়ী তা নিষ্পত্তি ও সংগতিপূর্ণ নয়।

লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর লিখিত এ চিঠিটি জমা দেন। জাতীয় সংসদের প্যাডে লেখা চিঠিতে সইয়ের নিচে নিজেকে টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকী দাবি করেন, সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে বিতর্ক নিষ্পত্তির বিষয়টি তার ক্ষেত্রে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ যুক্তিতে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে শুনানিতে না গিয়ে স্পিকারকে চিঠি পাঠাতে অনুরোধ করেন বরখাস্ত হওয়া সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, উপর্যুক্ত আলোচনার আলোকে এ বিষয়টি স্পষ্ট, স্পিকার কর্তৃক প্রেরিত ও উল্লেখিত সংবিধানের ৬৬(৪) দফায় বর্ণিত সারমর্মের সাথে আমার বিষয় ও বিতর্কটি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ফলে নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে ৬৬(৪) দফার বিষয়ে যা বলার এবং কার্যক্ষেত্রে ৬৬(২) ও ৭০ ধারার কোনো ব্যত্যয় না ঘটায়, কোনো কিছু করণীয় আছে বলে মনে হয় না।

উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্তব্যের কারণে বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর পাশাপাশি দল থেকেও বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে দলের গঠনতন্ত্রের ৪৬(ক) ও (ঞ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।