আনন্দের জোয়ারে ভাসছেমাগুরার ঘোড়ামারা : বিশ্বকাপ জয়ে কৃষক আমজাদের মেজবান

 

স্টাফ রিপোর্টার: মাগুরারসেই জার্মান ফুটবল দলের ভক্ত কৃষক আমজাদ হোসেন এখন আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন।জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে তার গ্রামের লোকেরা তাকে নিয়ে আনন্দ মিছিল করেছেন।তাকে গোসল করিয়েছেন দুধ দিয়ে। এদিকে আমজাদ মেজবান করে গ্রামেরঅন্তত ৫শ মানুষকে ভুঁরিভোজ করানোর ঘোষণা দিয়েছেন। জার্মান দূতাবাস আমজাদকেঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

সাড়ে ৩ কিলোমিটার লম্বা জার্মানিরপতাকা তৈরি করে জার্মান জাতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবের আজীবনসদস্যপদ পাওয়া মাগুরার ঘোড়ামারা গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেনকে নিয়ে সোমবারভোররাতেই শুরু হয় আনন্দ উল্লাস। জার্মানির জয় নিশ্চিত হওয়ার পরই তারগ্রামের লোকজন তাকে কাঁধে তুলে নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। এরপর সকালহতেই গ্রামের শত শত লোক তার বাড়িতে আসতে শুরু করেন। তারা আমজাদকে মাথায়তুলে জার্মানির পতাকা নিয়ে গ্রামে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রারপর রীতি অনুযায়ী গ্রামের মানুষ দুধ ছিটিয়ে বরণ করেন এই জার্মান ভক্তকে।তারপর দুধ মেশানো পানি দিয়ে তাকে গোসল করানো হয়।

আমজাদগ্রামের সবাইকে তিনি খাওয়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ডয়চে ভেলেকে তিনি টেলিফোনেজানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করেনিতে মেজবানের আয়োজন করবেন। এই মেজবানে অন্তত ৫০০ লোককে ভুঁড়িভোজেরআমন্ত্রণ জানাবেন তিনি। এজন্য টাকা পয়সা জোগাড়ে লেগে গেছেন। প্রয়োজন হলে এবারও তিনি জমি বিক্রি করবেন বলে জানান। তবুও ভোজে কাউকে অতৃপ্ত রাখবেন না তিনি।

এদিকেগ্রামের মানুষও এবার জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে বেজায় খুশী। তাদের কথা আমজাদতাদের গ্রামকে পরিচিত করেছেন। এ গ্রামটিকে এখন সবাই চেনে৷ তারাও চান এবারআমজাদের মেজবানে সহায়তা করতে।

১৯৮৭ সালে দুরারোগ্য এক অসুখেআক্রান্ত হলে কৃষক আমজাদ হোসেন (৬৫) চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পথ্য ব্যবহারকরেও কোনো সুফল পাননি৷ শেষে জার্মানি থেকে আনা ওষুধ সেবনে সুস্থ হয়ে ওঠেনতিনি। তারপর থেকেই জার্মানির প্রতি ভালোবাসা তার। জার্মানির প্রতিভালোবাসার কারণে তিনি এবারের বিশ্বকাপে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৩কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মানির পতাকা তৈরি করেন। এজন্য তাকে বিক্রি করতে হয়েছেফসলি জমি। এই খবর সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরে আকৃষ্ট হয় ঢাকারজার্মান দূতাবাস। ঢাকায় জার্মানির শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. ফ্যার্ডিনান্ডফন ভেহে শনিবার বিকেলে মাগুরায় যান আমজাদের তৈরি করা দীর্ঘ পতাকাটি দেখতে।সেখানে তিনি আমজাদ হোসেনকে জার্মান ফুটবল দলের অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবেরআজীবন সদস্যপদ দেয়ার ঘোষণা দেন। ফ্যান ক্লাবের সদস্যপদের পাশাপাশি তার হাতেতুলে দেয়া হয় শুভেচ্ছা স্মারক, জার্মান জাতীয় দলের পতাকা, জার্সি ও একটিফুটবল। এদিকে ঢাকায় জার্মান ফুটবল দলের ভক্তরাও নানাভাবে উদযাপনকরছেন জার্মানির বিশ্বকাপ জয়কে। ভোররাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন। আর সকালেবাইরে বের হন প্রিয় জার্মান দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে চলছে জার্মান ভক্তদের জয় উদযাপন৷ তারা নানাধরণেরছবি আর মন্তব্য লিখে জয়কে উপভোগ করছেন।

গতকাল সোমবার রাতে জার্মান ফুটবলদলের ভক্তদের ঢাকায় একাধিক পার্টি আয়োজনেরও খবর পাওয়া গেছে। জার্মানভক্তসাংবাদিক সমীর কুমার দে ডয়চে ভেলেকে বলেন, জার্মানি যোগ্য দল হিসেবেইবিশ্বকাপ জিতেছে। তারা দাপটের সঙ্গে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে দাপটেরসঙ্গেই শেষ করেছেন। এরকম একটি পেশাদার এবং ভারসাম্যপূর্ণ দলের জয়ের মধ্যদিয়ে ফুটবলেরই জয় হলো বলে মনে করেন তিনি।