আদালতে সাক্ষীকে মুফতি হান্নানের হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার: সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার মামলার এক সাক্ষীকে আদালতেই হুমকি দিয়েছেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর (হুজি) প্রধান মুফতি আব্দুল হান্নান। বোমাটি তোকেই মারা উচিত ছিলো, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় সাক্ষী শাখাওয়াত হোসেনের উদ্দেশে বলেন তিনি।

২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা চালিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৩ জন এ মামলায় অভিযুক্ত। সাক্ষী শাখাওয়াত নিজেও একজন আইনজীবী। বাম আন্দোলনের এ কর্মী সেদিন ওই সমাবেশে ছিলেন এবং বোমা হামলায় সিপিবিকর্মী হিমাংশু মণ্ডল তার সামনেই মারা গিয়েছিলেন। ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য দেন শাখাওয়াত। সাক্ষ্যে তিনি মুফতি হান্নানকে বোমা হামলার সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করেন। শুনানি শেষে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যাওয়ার পর সাক্ষী শাখাওয়াত আদালত থেকে বের হওয়ার সময় আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মুফতি হান্নান হুমকি দিতে থাকেন। মুফতি হান্নান বলছিলেন, বোমাটা তোকেই মারা উচিত ছিলো। তুই আমাকে চিনিস? আদালত থেকে বের হয়, তোকে আমি দেখে নেবো। শাখাওয়াত সাংবাদিকদের বলেন, কাঠগড়ার লোহার ফাঁক দিয়ে হাত বাড়িয়েও আমাকে ধরার চেষ্টা করছিলো মুফতি হান্নান। এ সময় আদালত পুলিশ তৎপর হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা, রমনার বোমা হামলার মামলার আসামি মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ আরও রয়েছে। রমনা বটমূলে বোমা হামলার মামলায় এ জঙ্গি নেতা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহিদ সরদারকে এজলাসে বসেই হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ঠিক হয়েছে আগামী ২৬ জুলাই।

সিপিবি সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খানের দায়ের করা এ মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- মুফতি মঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মো. মশিউর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মুহিবুল মুত্তাকিন, আনিসুল মুরসালিন, রফিকুল ইসলাম মিরাজ ও নুর ইসলাম।

এর মধ্যে মুফতি হান্নান, মুফতি মঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও মো. মশিউর রহমান কারাগারে রয়েছেন। বাকি ৬ আসামি পলাতক। সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলায় খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবিকর্মী হিমাংশু মণ্ডল, খুলনার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরার লতিফ বাওয়ানি জুটমিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম এবং মাদারীপুরের মুক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান।

হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন পর মারা যান খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস রায়।