আগামী বছর স্মার্ট কার্ডের জাতীয় পরিচয়পত্র : নষ্ট হলে দিতে হবে সর্বনিম্ন ২শ টাকা

 

স্টাফ রিপোর্টার: আগামীবছরের শুরুতেই সকল ভোটারদের ১০ বছরের জন্য দেয়া হবে স্মার্ট কার্ডেরজাতীয় পরিচয়পত্র। তবে স্মার্ট কার্ডের এই পরিচয়পত্র হারালে টাকা ছাড়া মিলবেনা। প্রথমবার হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে ২শটাকা; দ্বিতীয়বারের জন্য ৩শটাকা এবং পরবর্তী যেকোনো বারের জন্য ৫শটাকা নির্বাচন কমিশন সচিবেরঅনুকূলে জমা দিতে হবে। তবে জরুরি ভিত্তিতে পরিচয়পত্র পেতে হলে ৩শটাকাথেকে সর্বাচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত লাগবে। আর নবায়ন করতে হলে একশ টাকাদিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু প্রথমবারের জন্য বিনামূল্যে স্মার্টকার্ডের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃক প্রণীতজাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিধিমালা-২০১৪ এ বিধান রাখা হয়েছে। গতকালবৃহস্পতিবার কমিশন সভায় এটি অনুমোদন করা হয়েছে। ভেটিঙের জন্য আগামীসপ্তাহে এ বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। কমিশনের নির্ভরযোগ্যসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

স্মার্ট কার্ড প্রসঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রনিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীনবলেন, প্রথমবার ফ্রি স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে। নবায়ন, হারানো বানষ্ট হলে নির্ধারিত ফি জমা দিতে। মূলত উন্নতমানের এই কার্ডের সুরক্ষারজন্য এই বিধান করা হয়েছে।আইডিয়া নামের প্রকল্পের (আইডেন্টিফিকেশনসিস্টেম ফর ইনহ্যান্সিং অ্যাক্সেস টু সার্ভিসেস) আওতায় এ বছরের শেষদিকে সবনাগরিকদের পর্যায়ক্রমে স্মার্ট কার্ড দেয়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় কমিশন।আগামী বছরের শুরুতেই ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকদের এ স্মার্ট কার্ড সরবরাহকরা হবে। এ জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালের ২১ জুলাই বিশ্বব্যাংকের সাথে একহাজার ৩৭৯ কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষর করে। স্মার্ট কার্ড প্রদানের জন্যকমিশন যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিধিমালার খসড়া করেছে তাতে প্রথমবারেরমতো অনলাইনে ভোটার হওয়ার সুযোগ থাকছে। কমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেঅনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করার সুযোগ থাকবে। এমনকি যারা ভোটারতালিকাভুক্ত নন তারাও জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

ইসিরজাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্রেরজালিয়াতি রোধে নাগরিকদের দেয়া হবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্র তথাস্মার্ট কার্ড। দেশে তৈরি দীর্ঘমেয়াদি এ কার্ডের প্রাথমিক ব্যয় হচ্ছে প্রায়দুশ টাকা। টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখি ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তাসাধারণভাবে স্মার্ট কার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে। বর্তমানে এক পৃষ্ঠায় নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্ম তারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা-সংবলিতলেমিনেটিং করা কার্ড পাচ্ছেন ভোটাররা। স্মার্ট কার্ডে নাগরিকের সব তথ্যথাকবে। তবে ভোটারযোগ্যদের পরে পর্যায়ক্রমে সবাইকে স্মার্ট কার্ড প্রদানকরতে চায় কমিশন।

বর্তমানে ৯ কোটি ২০ লাখের বেশি নাগরিক ভোটারতালিকাভুক্ত রয়েছেন। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে এটিএমশামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিসহ ভোটার তালিকাপ্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কাজ শুরু করে। দেশের সব নাগরিককে জাতীয়পরিচয়পত্র দেয়ার বিধান রেখে গত বছর ৬ অক্টোবর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (সংশোধন) বিল, ২০১৩সংসদে পাস হয়। আইনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন প্রক্রিয়ায়নাগরিকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষণও গোপনীয়তা রক্ষার বিধান রাখা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা নির্বাচন কমিশনেরকোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে ভোটার তালিকা বা জাতীয়পরিচয়পত্র-সংক্রান্ত তথ্য বা উপাত্তের বিষয়ে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে শাস্তিসর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।