আগামী এসএসসি পরীক্ষা নতুন পদ্ধতিতে

স্টাফ রিপোর্টার:আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে করণীয় নির্ধারণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের (আইটি)  নিয়ে বৈঠক করা হবে। ওই বৈঠকে থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, বিটিআরসির আইটি (তথ্য প্রযুক্তি) বিশেষজ্ঞরা। থাকবেন দেশের খ্যাতনামা তথ্য প্রযুক্তিবিদরাও। খুব শিগগিরই এ সভা আহবান করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা ও চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপত্বিতে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, আইসিটি সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সব দফতর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সভা শেষে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, আগামী পরীক্ষায় যাতে কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রশ্ন ফাঁসের ৬টি কারণ চিহ্নিত করে তা সভায় অবহিত করেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রশ্ন ফাঁসের প্রথম কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, বিজি প্রেসে প্রশ্ন কম্পোজ, এডিট, প্রিন্ট ও প্যাকেজিং পর্যায়ে প্রায় ২৫০ ব্যক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারা প্রশ্নপত্র কপি করতে না পারলেও তা স্মৃতিতে ধারণ করা সম্ভব। এভাবেও প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছে শিক্ষা-মন্ত্রণালয়।

দ্বিতীয় কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রশ্ন ট্রেজারি বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। অতিরিক্ত কেন্দ্রের অনুমতি দেয়া হয়েছে। অথচ সেখানে পর্যাপ্ত জনবলের অভাব রয়েছে। তৃতীয় কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, ভেন্যুগুলো থেকে মূল কেন্দ্রগুলোর দূরত্ব অনেক বেশি। ফলে ৩০ মিনিটের আগে কেন্দ্র সচিব প্রশ্ন খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। সেখান থেকেও প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে। চতুর্থ কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, পরীক্ষার্থী বা পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। গুটিকয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে মূল প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে যাচ্ছে। পঞ্চম কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা তত্পরতা আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। ষষ্ঠ কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টগুলোও শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী এসএসসি পরীক্ষা নতুন পদ্ধতিতে : আগামী এসএসসি পরীক্ষা নতুন পদ্ধতিতে নেয়া হবে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন। সভা শেষে  তিনি বলেন, আমরা যেকোনো পদ্ধতিতে যাই না কেন, তার জন্য নতুন একটি প্রশ্নব্যাংক বানাতে হবে। এজন্য ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগবে।