আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দু প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের পর একজনের সংবাদ সম্মেলনে দাবি

শাদা কাগজে স্বাক্ষর! ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে স্বস্তি ফেরাতে সহায়তা করুন

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে প্রাথমিকভাবে বাতিল হওয়া দু স্বতন্ত্র প্রার্থীর একজন মতিয়ার রহমান সংবাদ সম্মেলনে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন, অপর প্রার্থী মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু প্রতিকারের প্রত্যাশায় নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তিনিও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন।

মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রবীণ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মীর্জা সুলতান রাজার সহোদর। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের একজন ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন তথা নৌকা প্রতীক না পেলেও তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়পত্র দাখিল করেন। তার মনোনয়ন যে অভিযোগে প্রাথমিকভাবে বাতিল করা হয়েছে, সেই একই অভিযোগে মতিয়ার রহমানের মনোনয়নও প্রাথমিকভাবে বাতিল করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং অফিসার তথা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন।

স্বতন্ত্রপ্রার্থী হলেও রাজনীতিকদের অনেকেরই ভাষায় এরা বিদ্রোহী প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীতপ্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। একই সাথে বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আকবর আলী এবং ওয়ার্কার্সপাটি মনোনীত সিরাজুল ইসলাম শেখের মনোনয়নপত্র। জাতীয় পার্টি জেপি (মঞ্জু) মনোনীত প্রার্থী এসএম মঞ্জুর-উল-করীম রুবেলের প্রার্থীতাও প্রাথমিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সাথে সাথে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে চুয়াডাঙ্গার দু আসনে প্রাথমিকভাবে বৈধ প্রার্থী থাকছেন দুজন। এরা হলেন হাজি আলী আজগার টগর ও সিরাজুল ইসলাম শেখ। অবশ্য আপিল করে অন্যরা প্রার্থীতা পেলে প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা বাড়তে পারে।

মনোনয়নপত্র প্রাথমিকভাবে বাতিল ঘোষণা করার পর দর্শনা পৌরসভার সাবেক মেয়র দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান প্রেসক্লাব চুয়াডাঙ্গায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি তার মনোনয়নপত্রের সাথে দেয়া সমর্থিত ভোটারদের মধ্যে ৯ জনকে সংবাদ সম্মেলন হাজির করেন। মতিয়ার রহমান বলেন, শর্ত অনুযায়ী মোট ভোটারের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন স্বাক্ষরিত তালিকা যুক্ত করি। তদন্তে নাকি তাদের মধ্যে ৬ জন অস্বীকার করেছে, ৩ জন স্বীকার করেছে, একজনকে পাওয়া যায়নি। আমি তাদেরকে হাজির করেছি। ওদের মুখ থেকে শুনে সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করে দেশবাসীকে জানিয়ে দিন, আমার প্রার্থীতা নিয়ে কী রকম চক্রান্ত করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করুন। এ আহ্বান জানানোর পর উপস্থিত ৯ ভোটার তাদের পরিচয় দেন। এরা হলেন- দর্শনা মোহাম্মদপুরের লাকী আক্তার, কলেজপাড়ার সিরাজুল ইসলাম, জায়নগরের নাসিম, রামনগরের রবিউল ইসলাম, থানাপাড়ার সালমা, আজিমপুরের শাহিন মিয়া, আকন্দবাড়িয়ার মিজারুল ইসলাম, জয়নগরের ঠাণ্ডু ও পরানপুরের জিন্নাত আলী। এরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে বলেন, আমাদের নিকট থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেট শাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে আনেন। স্বাক্ষর না করলে ভোট দিতে পারবো না বলে জানিয়ে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।

মতিয়ার রহমান সংবাদ সম্মেলন করলেও আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ অবশ্য তা করেননি। তবে তিনি মাথাভাঙ্গাকে বলেছেন, আমি আমার মনোনয়নপত্রের সাথে যথাযথভাবে কাগজ যুক্ত করেছিলাম। অথচ ১ শতাশং স্বাক্ষীর নাকি পূর্ণ হয়নি। এ বলে আমার মনোনয়ন প্রাথমিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। আমি আপিল করে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রার্থীতা পাওয়ার পক্রিয়া শুরু করছি।