আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতের মতো আগামী নির্বাচনেও দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন কামনা করে বলেছেন, আমরা আপনাদের ভোটে আরেকবার দেশ সেবার সুযোগ চাই। নৌকা মার্কা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী’র প্রতীক। আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতা ও মুক্তির এ প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন, আমরা সকল বিভেদ ভুলে সম্মিলিতভাবে শান্তি, উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাই। চির অবসান ঘটাই হত্যা, সন্ত্রাস, হানাহানি, সংঘাত-রক্তপাতের। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি। দেশ গড়ার এ সংগ্রামে জনগণের জয়, বাংলাদেশের জয় অনিবার্য। তিনি আরো বলেন, অতীতের অন্ধকার ঘুচিয়ে বাংলাদেশ এখন আলোকোজ্জ্বল সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে পা বাড়িয়েছে। শুরু হয়েছে দারিদ্র্য ও পশ্চাত্পদতা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের ঐতিহাসিক কালপর্ব। আমরা সকলেই আলোর পথের যাত্রী। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিকে আমরা উপহার দেবো আমাদের ভিশন নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ‘রূপকল্প-২০৪১’।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি একথা বলেন। ‘শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে রচিত হয়েছে এই ইশতেহার। নির্বাচনের মাত্র ৮ দিন আগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর, বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত এবং বিচার বানচালের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িতদেরও বিচার এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও প্রচার নিষিদ্ধ করার অঙ্গীকার সন্নিবেশিত হয়েছে ইশতেহারে। এছাড়া ইশতেহারে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় যমুনা ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু, সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, ফোর-জি চালু, দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা-দক্ষতা বাড়িয়ে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি, প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু, প্রতি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্থরের শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল ও স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার অব্যাহত, তিনস্তর বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখারও অঙ্গীকার রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বিকেল সোয়া ৩টায় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন। এ সময় কানায় কানায় পূর্ণ সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। দলের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূরের সঞ্চালনায় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানপর্ব শুরু হয়। ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।