আওয়ামীলীগের বিক্ষোভ : অর্পিত সম্পত্তি হতানোর চক্রান্ত প্রতিহত করার ঘোষণা

 

আলমডাঙ্গা শহরের হাজার হাজার কোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে ভারতীয় দু নাগরিকের দোসরদের নতুন চক্রান্ত

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা শহরের হাজার হাজার কোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি মিথ্যা তথ্য দিয়ে হাতিয়ে নেয়ার চক্রান্তকারীদু ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে গতকাল আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে আওয়ামীলীগের অফিস থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে বিশাল ওই বিক্ষোভ মিছিলটি পার্টি অফিসে ফিরে সমাবেশ করে। উপজলো আওয়ামীলীগের সভাপতি হাসান কাদির গনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা হেলাল উদ্দীন। জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আওরঙ্গজেব মোল্লা টিপু।অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর সভাপতি আবু মুসা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন, উপজলো সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম মন্টু চেয়ারম্যান, উপজলো সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, বিআরডিবির চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মহিত, সাবেক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আহসানউল্লাহ, যুগ্মআহ্বায়ক সাবেক কমিশনার শাহীন রেজা, সাজ্জাদুল ইসলাম স্বপন,পৌর যুবলীগ সভাপতি আব্দুল গাফফার, আনোয়ার হোসেন সোনাহার, ফারুক হোসেন, ডিটু, তবারক, সাবকে ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা শাহিন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সালমুন আহমদে ডন, কলজে ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুল ইসলাম,তপন,সাইকা,জাইদুল,আলম,তামিম,পিন্টুপ্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশে প্রত্যেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানাগেছে, দীর্ঘদিন ধরে আলমডাঙ্গার কয়েক হাজার কোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি দখলের উদ্দেশে ভারতীয় নাগরিক রাজারাম পাডিয়া ও পুরুষোত্তম পাডিয়া নামের দু ভাই বাংলাদেশে কোটি টাকার মিশনে নামেন। আলমডাঙ্গার চিহ্নিত কিছু দালাল দেশের স্বার্থবিরোধী এ চক্রান্তে যোগ দেন। দালালদের সহযোগিতায় তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে আলমডাঙ্গা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করান। বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আলমডাঙ্গাবাসী। দৈনিক মাথাভাঙ্গাসহ শীর্ষ স্থানীয় জাতীয় দৈনিকে একাধিকবার বেশ গুরুত্বের সাথে বিষয়টি প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পড়ে ও আলমডাঙ্গার বিক্ষুব্ধ জনতার দাবির মুখে আলমডাঙ্গা নির্বাচন অফিস ভারতীয় দু নাগরিকের সরবরাহকৃত তথ্য যাচাই করে। তাদের সরবরাহকৃত তথ্যের সত্যতা না পাওয়ায় ভোটার তালিকা থেকে ভারতীয় দু নাগরিকের নাম কর্তনের জন্য গত বছর ১৮ এপ্রিল আলমডাঙ্গা নির্বাচন অফিস লিখিত সুপারিশ প্রেরণ করে জেলা নির্বাচন অফিসার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব, খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার এম.এ.জি মোস্তফা ফেরদৌস স্বাক্ষরিত ওই সুপারিশপত্রে উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর ওই দু ভারতীয় নাগরিকের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তকরণে সরবরাহকৃত তথ্য যাচাই-বাছাই করার দাবির প্রেক্ষিতে গত ১৫ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

শুনানির দিন অভিযুক্ত দু ভাই উপস্থিত হননি। নির্বাচন অফিসে গোপন অনুসন্ধানে জানাযায়,ওই ভোটারদ্বয় প্রকৃতপক্ষে আলমডাঙ্গা পৌরসভার উল্লেখিত ভোটার এলাকায় বসবাস করেন না। ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহকারী ওই দু ভাইকে চেনেন না ও কোনো দিন দেখেননি বলে উল্লেখ করেছেন। শুধুমাত্র নিবন্ধন ফরম-২ পূরণের ক্ষেত্রে আলমডাঙ্গা পৌরসভা কর্তৃক জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিকত্ব সনদের মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সুপারিশপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু গোপন অনুসন্ধানে এবং শুনানি শেষে জানা যায়, রাজারাম পাডিয়া ও পুরুষোত্তম পাডিয়া, বাবা মৃত প্রহল্লাদ রায় পাডিয়া প্রকৃতপক্ষে উল্লেখিত ভোটার এলাকায় বসবাস করেন না। এ কারণে ভোটার তালিকা ২০০৯ সনের ৬নং আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী ভোটার হওয়ার যোগ্য নয়,সেহেতু সংশ্লিষ্ট ভোটারদ্বয়ের নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তনযোগ্য।

এরপর থেকে ভারতীয় দু নাগরিক ও তাদের এদেশীয় দোসররা নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন। তারা নির্বাচন অফিসের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের মাধ্যমে স্থগিতাদেশ জারি করেন। আগামী পরশু ১৭ জুলাই এব্যাপারে আদালতে নতুন করে শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। ওই দিন ভারতীয় দু নাগরিককে তাদের এদেশীয় দোসররা আদালতে হাজির করাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বিষয়টি প্রকাশ হলে গতকাল আলমডাঙ্গা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ওই চক্রান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। ভারতীয় দু নাগরিককে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে।