অস্ত্র ঠেকিয়ে ১৬ লাখ টাকা ছিনতাই : দত্তনগর ফাঁড়ির এএসআইসহ ২ সদস্য প্রত্যাহার

চুয়াডাঙ্গা থেকে ট্রাক কেনার জন্য জীবননগরের উদ্দেশে রওনা হয়ে ব্যবসায়ী পড়েন একদল পুলিশের রোষানলে

মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর ফাঁড়ি পুলিশের কতিপয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীর বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ১৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মহেশপুরের দত্তনগর ফাঁড়ির এএসআই নুরুন্নবী, কনস্টেবল সোহেল রানা ও হোসেন আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জানা গেছে, গতপরশু রোববার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাহাজ্জেল আলীর ছেলে ওয়াজির আলী ট্রাক কেনার উদ্দেশে জীবননগর যাচ্ছিলেন। তিনি সন্তোষপুর নামক স্থানে পৌছুলে দত্তনগর ফাঁড়ির এএসআই নুরুন্নবী, কনস্টেবল সোহেল রানা ও হোসেন আলী তাকে বাস থেকে নামিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে একটি কোয়ার্টারে আটকে রাখেন। এরপর তার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ ১৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ওয়াজির আলী কান্নাকাটি করলে তাকে ১ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে ক্যাম্প থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে লোকজন নিয়ে অনেক তদবির করার পর ৮ লাখ টাকা খালিশপুর রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ফেরত দেয়। ওইদিন বিকেল ৪টার সময় ওয়াজির আলীসহ জীবননগর পৌরসভার কমিশনার ও স্বরুপপুর ইউনিয়নের দুজন মেম্বারসহ ৮-১০ জন বাকি টাকার জন্য দেন-দরবার করেন। এভাবে বিষয়টি দ্রুত জানাজানি হয়ে পড়ে। ক্ষোভ আর অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। টাকার জন্য ভুক্তভোগীরা দত্তনগর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাহাফুজকে জানালে তিনি সাতক্ষীরা থেকে ফিরে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। ঘটনাটি এক’কান দু’কান হয়ে গেলে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের নির্দেশে মহেশপুর থানার ওসি আহম্মেদ কবির গতকাল সোমবার প্রাথমিক তদন্ত করে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টির সত্যতা পান এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে এএসআই নুরুন্নবীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠো ফোনে বলেন, ঘটনাটি আমি করিনি আমাদের দুজন কনস্টেবল সোহেল রানা ও হোসেন আলী ঘটিয়েছে। স্বরুপপুর ইউনিয়নের মেম্বার আব্দুল হামিদ ও রবিউল ইসলাম জানায়, সন্ধ্যার সময় চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী ওয়াজির আলী ও জীবননগর থেকে আগত লোকজনের সাথে তারা ফাঁড়িতে যায় এবং বাকি টাকা ফেরত দেয়ার আলোচনা হয়। তারা জানায়, ওই ব্যক্তির কাছ থেকে পুলিশ ১৬ লাখ টাকা নিয়েছিলো এবং ৯ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে। রূপালী ব্যাংক খলিশপুর শাখার ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি ৮ লাখ টাকা টিটি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আহম্মেদ কবির জানান, আমি পুলিশ সুপারের নির্দেশে গতকাল সোমবার সকালে দত্তনগর ফাঁড়ি পরিদর্শন করি এবং ঘটনার সত্যতা পাই। তিনি আরও জানান, ওই ব্যবসায়ীর সাথে আমার কথা হয়েছে, সে ১৬ লাখ টাকার কথা স্বীকার করেছে এবং ৯ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছে। বিষয়টি আমি লিখিতভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বাকি ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ নিবেন। তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত তিন পুলিশকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি।