অব্যাহত লোকসানে গাংনীতে কমছে কোরবানির গরুর খামার

মাজেদুল হক মানিক: প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে ঘিরে মেহেরপুরের গাংনীতে বাণিজ্যিকভাবে লালন-পালন করা হয় গরু-ছাগল। এবারো ঢাকাসহ বিভিন্ন কোরবানির পশুহাটে গরু বিক্রির জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তবে গত তিন বছর ধরে লোকসানের ফলে আতঙ্কে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাইপুর গ্রামের খামারি মোকলেছুর রহমান জানান, গরু পালন করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছে। কিন্তু গত তিন বছর অব্যাহত লোকসানের ফলে তার মতো অনেকেই খামার বন্ধ করে করে দিয়েছেন।

একই গ্রামের গরু পালনকারী হাসান আলী জানান, এবার তার পালিত দুটি বড় আকারের গরু ঢাকার বাজারে তুলবেন। গরুর খাবার ও ওষুধসহ পালন খরচ প্রতিবছরই বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় গরুর দাম বৃদ্ধি পায়নি। কোরবানির হাট যেন বাজির ঘোড়ার মতো। ভাগ্যে লাগলে ভালো, নয় তো পানির দরে বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে হয়। ধার-দেনা করে যারা গরু পালন করেন তাদের দেনা পরিশোধ হচ্ছে না। ফলে অনেকেই এখন কোরবানির গরু পালন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। লোকসানের জন্য বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গরু আমদানিকে দায়ী করলেন এ অঞ্চলের গরু পালনকারী ও খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের চেয়ে এবার কোরবানির গরু পালন কিছুটা কমেছে। খামারের সংখ্যা কমলেও বাড়িতে দুয়েকটি করে গরু পালনের সংখ্যা প্রায় গত বছরের মতোই রয়েছে। চলতি বছরে প্রায় আট হাজার গরু বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হবে। তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই বড় গরুর সংখ্যা একেবারেই কম। কেননা বড় গরুতে লোকসান বেশি।

খামারের সংখ্যা কমার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক কুমার মণ্ডল জানান, জেলায় পালিত পশুর মধ্যে ৫০ ভাগ জেলায় জবাই করা হয় বাকি অর্ধেক সরাসরি এবং বিভিন্ন হাটের মাধ্যমে ঢাকার কোরবানির পশুহাটে তোলা হয়। বিক্রির জন্য পশুর প্রয়োজনীয় পরিচর্যা দিতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে প্রাণিসম্পদ অফিসের কয়েকটি টিম। খামারি ও গরু পালনকারীদের উৎসাহ দিতে সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে পশুর নায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

গরু পালনকারীরা আরো জানান, গত কয়েক বছরের লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়েই এবারো তারা যাবেন ঢাকার কোরবানির পশুহাটে। তাই হাট ও সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।