অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দুজন পাকড়াও ॥ ভারতীয় পরিচয়পত্রসহ বহুগাজপত্র উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চাকুলিয়া গ্রামের সীমান্তবর্তী পশ্চিমপাড়ায় বিজিবির অভিযান

দর্শনা অফিস/কার্পাসডাঙ্গা/ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চাকুলিয়া গ্রামের ভারত সীমান্তবর্তী পশ্চিমপাড়া থেকে আলমগীর হোসেন (৩০) এবং মোত্তালিব (২৪) নামে দুই ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে সীমান্তের ৮৭ নং মেন পিলারের বাংলাদেশ অংশ থেকে এদের দুজনকে আটক করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে অবৈধপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দুইজন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, গোপন এ সংবাদের ভিত্তিতে দামুড়হুদার ঠাকুরপুর বিওপি সদস্যরা চাকুলিয়া গ্রামের ভারত সীমান্তবর্তী পশ্চিমপাড়ায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে আটক করা হয়  মো. নুহ নবীর ছেলে আলমগীর ও শহিদুল ইসলামের ছেলে মোত্তালিব হোসনেকে। আটকের পর তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নিজ নিজ নামে ভারতীয় রেশন কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, প্যান কার্ড, পেশার পরিচয়পত্রসহ ভারতীয় রুপি, বাংলাদেশি টাকা, দুই দেশের মোবাইল সিমকার্ড, ভারতীয় ব্যাংকে লেনদেনের কাগজপত্র, ট্যাক্স কার্ড ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র এবং যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট।
আটকের পর গতরাতে চুয়াডাঙ্গা জাফরপুরস্থ বিজিবি ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে নিয়ে দুজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিকভাবে দুজনেই দাবি করেছে তাদের বাড়ি দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ালগাছি আনন্দ বাজারপাড়া গ্রামে। এর পাশাপাশি আলমগীর ও মোত্তালিব দুজনই বলেছে তারা ভারতেরও নাগরিক। আলমগীর দীর্ঘ  সাড়ে ৬ বছর দিল্লিতে বসবাস করে আসছে। সেখানকার হাইকোর্টে এক আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করে সে, ওই পরিচয়পত্রও উদ্ধার করেছে বিজিবি।
কুড়ালগাছি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজিবির হাতে আটক আলমগীর ও মোত্তালিব মূলত মানবপাচারকারী। দীর্ঘদিন ধরে তারা দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা নিয়ে এ অপকর্ম চালিয়ে আসছে। দুজনে বিয়ে করেছে ভারতে। তবে আলমগীর দুই দেশে একাধিক বিয়ে করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিজিবির হাতে ধরা পড়ার পর নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা চালায় সে। ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের সম্পাদকের আত্মীয় বলেও পরিচয় দেয় এই আলমগীর। রাতেই মামলা দায়েরপূর্বক দুজনকে দামুড়হুদা থানায় সোপর্দের প্রক্রিয়া চলছিলো।
চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির পরিচালক রাশিদুল আলম মাথাভাঙ্গাকে জানান, ঠাকুরপুর, মুন্সিপুরসহ বেশ কয়েকটি সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা চলছিলো কয়েকদিন যাবত। বিজিবির কাছে এ ব্যাপারে গোপন তথ্য ছিলো। ওই তথ্যের ভিত্তিতেই দুই অনুপ্রবেশকারীকে ধরা হয়েছে। আটককৃতরা ভারতীয় না বাংলাদেশি? এ প্রশ্নের জবাবে বিজিবি পরিচালক বলেন, আটকের পর দুজনের কাছ থেকে নিজেদের নাম ও ছবি সংবলিত ভারতের একাধিক পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে, এতে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয় ওই দুজন অনুপ্রবেশকারী।