অপ্রাপ্ত বয়সে ঘর ছেড়ে গঞ্জনা : প্রেমের বলি স্কুলছাত্রী নিশি

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: অপ্রাপ্ত বয়সে প্রেমের বলি হয়েছে বিষ্ণুপুরের স্কুলছাত্রী নিশি খাতুন (১৪)। প্রেমিক প্রতিবেশী মাসুমের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে দু দিন পর ফিরলেও বাঁচতে পারেনি সে। গত পরশু বুধবার তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

৮ম শ্রেণির ছাত্রী নিশির মৃত্যুতে তার প্রেমিক প্রতিবেশী মাসুমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাধলেও তার মেম্বার চাচার প্রভাবে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা এরকমই অভিযোগ তুলে বলেছে, যে মাসুম বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে নিশি খাতুনকে নিয়ে দু দিন দু রাত কাটালো নানাবাড়ি, সেই প্রেমিকের মত পাল্টানোর কারণেই নিশির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য নিশির পরিবারের লোকজন বলেছে, গঞ্জনা সইতে না পেরে গতপরশু বুধবার বিকেলে নিজ ঘরে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিশি খাতুন আত্মহত্যা করেছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে নিশি গ্রামেরই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে মাসুম এবার এসএসসি পাস করেছে। প্রথম রোজার দিন অর্থাৎ সোমবার মাসুমের হাত ধরে নিশি পাড়ি জমায় অজানা ঠিকানায়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে নিশির পিতাসহ পরিবারের লোকজন জানতে পারে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে নিশি মাসুমের হাত ধরে পালিয়েছে। থানায় নালিশও করা হয়। মাসুমের চাচা ইউপি সদস্য লিটন মোবাইলফোনে নিশির পিতাপক্ষকে জানায়, নিশিকে যতো দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ প্রতিশ্রুতি পেয়ে অপেক্ষার দু দিনের মাথায় গত বুধবার বাড়ি ফেরে নিশি। দু রাত দু দিন প্রেমিকের সাথে বাইরে অবস্থানের বিষয়টি জানাজানি হলে নানা গঞ্জনা শুরু হয়। নিশির পিতাপক্ষ বিয়ের দাবি তোলে। মাসুসের চাচা লিটন জানান, মেয়ের বয়স যেহেতু এখনও ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি সেহেতু এখন বিয়ে হবে কীভাবে? এ প্রশ্ন তুলতেই নিশির ওপর গঞ্জনা বেড়ে যায়। এরই এক পর্যায়ে বুধবার বিকেলে রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পরিবারের লোকজন জানায়, নিশি ঘরের মধ্যে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবেশীদের মধ্যে এ নিয়ে নানামুখি গুঞ্জন ওঠে। খবর পৌছায় পুলিশের কাছে। দামুড়হুদা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। গতকালই নিজ গ্রামে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পুলিশ বলেছে, আত্মহত্যা হলে কেন আত্মহত্যা করেছে তা যেমন খতিয়ে দেখা হবে, তেমনই অন্য কোনো কারণে মৃত্যু হলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ। মাসুম যে প্রতিশ্রুতিতেই নিয়ে যাক, তার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন পুলিশেরই এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। অবশ্য গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মাসুমের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। গ্রেফতারও করা হয়নি তাকে।