অপরিপক্ক আম পাড়ার দায়ে ব্যবসায়ীর ১০ হাজার টাকা জরিমানা

চুয়াডাঙ্গার গাইদঘাটে আমবাগানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার: গাছ থেকে অপরিপক্ক আম পেড়ে মজুদ করার অপরাধে চুয়াডাঙ্গায় এক আমব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপরিপক্ক কাঁচা আম কার্বাইড বা রিপেন দিয়ে অনিরাপদভাবে খাওয়ার উপযোগী করে বাজারজাতের উদ্দেশে মজুদ করার দায়ে এ আদালত পরিচালনা করা হয়। আমব্যবসায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের সুমিরদিয়া বলাকাপাড়ার জামাত আলীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল রোববার বেলা ৩টার দিকে সদর উপজেলার গাইদঘাট দক্ষিণপাড়ার ওই আমবাগানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ রায় প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর জানান, জাত ভেদে গাছ থেকে আম পাড়ার নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। সেই সময়ের আগে গাছ আম পাড়লে তা অপরিপক্ক থাকবে। ওই আম পাকিয়ে খাওয়ার উপযোগী করতে ক্ষতিকারক কার্বাইড বা রিপেন মেশাতে হবে। যা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক। এ বছর আমে ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে বাজারজাত করার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রশাসন। তারই প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট দক্ষিণপাড়ার জামাত আলীর আমবাগানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ব্যবসায়ী জামাত আলী চট্টগ্রামে পাঠানোর জন্য অপরিপক্ক আম পেড়ে মজুদ করার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত গিয়ে তা বন্ধ করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কেএম মামুন উজ্জামান ওই বাগানেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আমব্যবসায়ী জামাত আলীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

গত ১২ মে শুক্রবার অপরিপক্ক আম পাড়ার সংবাদ পেয়ে গাইদঘাট গ্রামে যান কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর, সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হকসহ অনেকেই। সেখানে আমব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের দেয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে আম না পাড়ার আশ্বাসে ফিরে আসেন তারা। ওই সময় সকল আমব্যবসায়ীদের ১৯ মের আগে আম পাড়া থেকে বিরত থাকতে বলেন তারা। পরে গতকাল রোববার একই সংবাদে আবারও ওই বাগানে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আদালতে সুমিরদিয়া বলাকা পাড়ার মৃত মফিদ উদ্দিনের ছেলে জামাত আলীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর, সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক, এসআই জসিম উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, জাত ভেদে আম পাড়ার নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। গোবিন্দভোগ জাতের আম পাড়ার নির্দিষ্ট সময় মে মাসের ২৫ তারিখের পর, গুলাবখাস ৩০ মের পর, গোপালভোগ ১ জুনের পর, রানিপছন্দ ৫ জুনের পর, হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাত ১২ জুনের পর, ল্যাংরা ১৫ জুনের পর, লক্ষ্মণভোগ ও হাড়িভাঙা ২০ জুনের পর, আম্রপালি ও মল্লিকা ১ জুলাই থেকে, ফজলি ৭ জুলাই থেকে ও আশ্বিনা জাতের আম পাড়ার নির্দিষ্ট সময় রয়েছে ২৫ জুলাই থেকে। তবে আবহাওয়া ভেদে এবার গরমের তীব্রতা বেশি থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের দু-এক দিন আগেও আম পাড়া যেতে পারে। এ বছর ক্ষতিকারক রাসায়নিকমুক্ত ফল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।