অনুমোদন ছাড়াই ওষুধ তৈরি ও বিক্রি : গাংনীর হেকিম মুজিবরের কারাদণ্ড

মেহেরপুরের গাংনী শহরের দি মুজিব হারবাধালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী শহরের দি মুজিব হারবাল ওষুধালয়ের হেকিম মুজিবর রহমানের এক বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ড্রাগ লাইসেন্স ও ওষুধ তৈরির অনুমোদন ছাড়াই ইউনানি ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করার অপরাধে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক অভিযানে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমাতুজ্জ-জোহরা ওই দণ্ডাদেশ দেন। অভিযানে তার নিজ বাড়িতে ওষুধ তৈরির কারখানাটি সিলগালা করা হয়। আদালতের আদেশে গতকালই তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমাতুজ্জ-জোহরা জানান, হেকিম মুজিবর রহমান নিজ বাড়িতে ইউনানি-আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করেন। ওই ওষুধ তিনি নিজেই রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার ও বাজারজাত করে আসছেন। গতকাল দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় তার দাওয়াখানার ওষুধ ও কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। এতে তার কাজের সাথে কাগজপত্রের অসঙ্গতি দেখা দিলে তাকে আটক করা হয়। তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয় তার বাড়ি পশ্চিম মালসাদহে। সেখানে একটি ছোট কক্ষে মেলে ওষুধের সন্ধান। কয়েকটি ড্রাম ও বোতলে তরল ওষুধ পাওয়া যায়। ওষুধ তৈরি ও বিক্রির জন্য ওষুধ প্রশাসন কিংবা ইউনানি-আয়ুর্বেদ বোর্ডের কোনো অনুমোদনপত্র বা লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হন মুজিবর রহমান। ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে ড্রাগ অ্যাক্ট ১৯৪০’র ১৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হয়।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- ড্রাগ সুপার (চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর) এসএম সুলতানুল আরেফিন। তিনি জানান, হেকিম মুজিবর রহমান ইউনানি ‘খ’ গ্রেডের সনদপত্রের অধিকারী। ওষুধ প্রশাসন ও ইউনানি-আয়ুর্বেদিক বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী তিনি কোনোভাবে ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করতে পারেন না। আইন লঙ্ঘন করে তিনি লিকুইড ওষুধ ও মলম তৈরি করে তাতে নিজের নাম সংবলিত লেবেল লাগিয়ে বাজারজাত করেন। তাছাড়া গুণগত মান সম্পন্ন ল্যাব ছাড়াই একটি খুপরি ঘরের মধ্যে নোংরা পরিবেশে তিনি ওষুধ তৈরি করে অপরাধ করেছেন।

দণ্ডিত হেকিম মুজিবর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতে বলেন, তিনি ইউনানি (কবিরাজি) ওষুধ তৈরি করেন। এর জন্য ইউনানি বোর্ড থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী দেশীয় ওষুধি গাছপালা থেকেই ওষুধ তৈরি করে রোগীর চিকিৎসা করেন। তার দোকানে হোমিওপ্যাথি ও অ্যালোপ্যাথি কোনো ওষুধ বিক্রি হয় না। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদেশে গতকালই মুজিবর রহমানকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। অভিযানে তার দোকান থেকে কিছু ওষুধের নমুনা জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।