অনিয়ম আর দুর্নীতির দুর্গে পরিণত হারদী হাসপাতাল

বিক্ষুব্ধ জনতার মুখে টিএইচএ ডা. জহুরুল ইসলাম একঘণ্টা অবরুদ্ধ

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষুব্ধ জনতা  আলমডাঙ্গার হারদী হাসপাতালের টিএইচএ ডা. আবু মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামকে আটকে রাখে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেলা ১২টা বাজার সাথে সাথে ডাক্তাররা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। অ্যাম্বুলেন্স, জেনারেটর ও এক্সরে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকার কারণে আশঙ্কাজনক রোগীদের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে বলে অভিযোগকারীদের দাবি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, অনিয়ম আর দুর্নীতির দুর্জ্ঞেয় দুর্গে পরিণত হয়েছে আলমডাঙ্গার হারদী হাসপাতাল। ঘড়িতে বেলা ১২টা বাজার সাথে সাথে দায়িত্ব পালনরত ডাক্তাররা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। ফলে বেলা ১২টার সাথে সাথে হাসপাতালেরও ১২টা বেজে যায়। ১২টায় ডাক্তারেরা হাসপাতাল ত্যাগ করে আলমডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভাড়াটে ডাক্তার হিসেবে ক্লিনিক সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। চিকিৎসার যাবতীয় গুরুদায়িত্ব তখন বর্তায় ডিপ্লোমা ডাক্তারদের ওপর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের একাধিক ডিপ্লোমা ডাক্তার সাংবাদিককে অভিযোগ করে বলেছেন, অনেকে তো ডিপ্লোমা ডাক্তারদের নামের পূর্বে ডাক্তার লিখলে প্রশ্ন তোলেন, অথচ ডিপ্লোমা ডাক্তাররাই দেশের চিকিৎসা সেবা টিকিয়ে রেখেছেন। তারা দাবি করেছেন, হারদী হাসপাতাল মূলত ডিপ্লোমা ডাক্তারেরা চালান। অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন, হাসপাতালের দুরাবস্থার জন্য শুধু ডাক্তাররা দায়ী নন, সমানভাবে কর্মচারীরাও দায়ী। হাসপাতালের টিএইচও আমড়া কাঠের ঢেকি বলে মন্তব্য করে তারা বলেন, তিনি নিজেই অর্থব্য। নানা দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। তার পক্ষে সম্ভব নয় কড়াকড়িভাবে হাসপাতালের প্রশাসন পরিচালনা করা।

কর্মচারীরা কেউ নিয়ম মেনে হাসপাতালে যাওয়া আসা করেন না। সারাদিন না এলেও কারো কিছু বলার নেই। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম জেনারেটর, এক্সরে মেশিন ও অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে আছে। অথচ মেরামত করা হয় না। হাসপাতালের কোনো রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলেও তাকে অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে অন্যত্র নেয়া সম্ভব হয় না। একই কারণে গত পরশু হারদী গ্রামের থানাপাড়ার অসুস্থ ফজলু সর্দারের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে হারদী গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিলো।

গতকাল বুধবার বেলা ১২টা বাজার পর পর হাসপাতাল ছেড়ে ডাক্তাররা শহরের ক্লিনিকগুলোর উদ্দেশে বের হলে গ্রামবাসীরা হাসপাতালে গিয়ে চড়াও হয়। হাসপাতালের নানা অনিয়ম, ডাক্তার-কর্মচারীদের অনুপস্থিতি, দুর্নীতির প্রশ্ন তুলে টিএইচও ডাক্তার আবু মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামকে গালমন্দ ও অপমান-অপদস্ত করে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা প্রায় ১ ঘণ্টা তাকে নিজ অফিসরুমে আটকে রাখে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।