অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ে লাখ টাকা হারানো চাষি আজ আবার কপি নিয়ে যাচ্ছেন খুলনায়

স্টাফ রিপোর্টার: কপি বিক্রি করে খুলনা থেকে ফেরার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে লাখ টাকা হারিয়ে কোনো রকম প্রাণে বাঁচা কপিচাষি আসমাউল আজ বুধবার ট্রেনযোগে আবারও কপি নিয়ে খুলনায় যাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার ক্ষেতের কপি তুলে ছোটভাই এনামুলকে দিয়ে মাগুরায় পাঠানোর সময় কপি চাষি আসমাউল বলেন, অজ্ঞান পার্টির ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো চলছে না।

গতপরশু সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি চুয়াডাঙ্গা কুলচারা নতুনপাড়ায় ফেরেন। গতকাল একটি পত্রিকায় তার মৃত্যুখবর প্রকাশ করলে হতবাক হন স্থানীয়রা। গতকাল মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘১১ বিঘা জমির কপি। অজ্ঞান পার্টির ভয়ে তো ক্ষেতে পচাতে পারছিনে। তুলতে হচ্ছে, বিক্রির জন্যও ছুটতে হচ্ছে। হরতালে সুহালে কি কোথায় যাওয়া যাচ্ছে? দুর্ভোগ হলেও করার কিছু নেই।’

আসমাউল হক দীর্ঘদিন ধরেই খাটোআবাদ করেন। তিনি ইতঃমধ্যেই দক্ষচাষি হিসেবে এলাকায় পরিচিতিও পেয়েছেন। এবার তিনি গ্রাম সংলগ্ন মাঠে ১১ বিঘা জমিতে কপির আবাদ করেছেন। চুয়াডাঙ্গার আড়তে বিক্রির পাশাপাশি তিনি কপি নিয়ে ঝিনাইদহ মাগুরা, ঢাকা ও খুলনায় যান। গত শনিবার দুটি ঝুড়ি ও ৪টি ঢপে কপি নিয়ে ট্রেনযোগে খুলনায় যান। চড়া দামে বিক্রি করে পান এক লাখ টাকা। ভালোদরে কপি বিক্রি করে হাসিমুখেই ট্রেনযোগে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সামনে বসা দুযাত্রীকে সন্দেহ হয়। ট্রেন ছাড়তেই ঝিমকি আসে। এরপর আর কিছুই জানেন না আসমাউল। পরদিন ভোরে দেখেন তিনি চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

কেমন আছেন তিনি? তা জানতে গতকাল কপিচাষি আসমাউলের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, তিনি তার ক্ষেতের কপি নিয়ে ব্যস্ত। ছোটভাইকে আলমসাধুযোগে কপি নিয়ে মাগুরায় পাঠাচ্ছেন। আর তিনি বুধবার রাতে কপি নিয়ে আবারও খুলনায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আসমাউল বলেছেন, বারবার তো আর অজ্ঞান করতে পারবে না। তা ছাড়া অজ্ঞানপাটির ভয়ে বসে থাকলে ক্ষেতের কপি পচে যাবে। কষ্ট করে আবাদ করা কপি তো আর জমিতে পচাতে পারছিনে।