অগ্নিগর্ভ দেশ : সারাদেশে অবরোধ সহিংসতায় নিহত ৮ : মেহেরপুরে গুলি

চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা বেপরোয়া : ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিন অগ্নিগর্ভ ছিলো চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশ। সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ করায় কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীদের সাথে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও সরকারি দলের কর্মীদের সংঘর্ষ ও সহিংসতায় ১ বিজিবি সদস্যসহ অন্তত ৮ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন শ’ শ’ নেতাকর্মী। দেশজুড়ে রেললাইনে ব্যাপক নাশকতা চালানো হয়। চুয়াডাঙ্গার উথলীতে গতরাতে একটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

Meherpur Strike pic_26.11.13_ (3)

পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে বিরোধী নেতাকর্মীদের বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটে রাজধানীর আমিনবাজার, উত্তরা, সাভার, বগুড়া, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা দক্ষিণ, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পিরোজপুর, রাজশাহী, নোয়াখালী, যশোর, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, লালমনিরহাট, লক্ষ্মীপুর, গাজীপুর, পটুয়াখালীসহ অন্তত ২০ জেলায়। সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলিতে কুমিল্লায় ১ বিজিবি সদস্যসহ ২ জন, সাতক্ষীরা সরকার দলীয় দু নেতা, বগুড়ায় যুবদল কর্মী, সিরাজগঞ্জ যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন। রেললাইন উৎপাটন ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, নাটোরে। নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বগুড়া, ফেনী ও চুয়াডাঙ্গা জেলায়। অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। রেললাইন উপড়ে রাজধানীর সাথে দেশের উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে অবরোধকারীরা। বন্ধ ছিলো রাজধানীর সাথে দূরপাল্লার বাস চলাচল। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহেও কোনো পরিবহন চলেনি। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে চলাচল করা অটোরিকশাও অবরোধকারীদের কবল থেকে রক্ষা পায়নি। সদর হাসপাতাল গেটে দুপুরে দুটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। রাতে গ্রীন ডায়গনস্টিকের সামনে একটি অটো ভাঙচুর করা হয়। প্রভাতি স্কুলের সামনেও রাতে একটি অটো ভাঙচুর করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের বাসভবনের অদূরে একটি অটোতে প্রেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রেসক্লাবের সামনে একটি মোটরসাকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। রূপছায়া সিনেমাহলের অদূরে কাঠগোলা নামকস্থানের সামনে একটি ভ্যানভর্তি বিচুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা আগুন নেভায়। ভ্যান থেকে বিচুলি দ্রুত ফেলে দেয়ার কারণে ভ্যানটি রক্ষা পায়। পুলিশ পরশু রাত থেকে গ্রেফতার অভিযান শুরু করে। দামুড়হুদা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী শাহসহ ৪ জনকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে।

বিএনপি দাবি করেছে- ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে সারাদেশে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতাকর্মী। নিহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. সাকমান, কুমিল্লা দক্ষিণ ছাত্রদলকর্মী দেলোয়ার হোসেন ও লাকসাম উপজেলা ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা বাবুল আহমেদ। এছাড়া অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহম্মদ, বিশ্বনাথ উপজেলায় যুবদল নেতা গোফরান খান, যশোর জেলা ছাত্রদলের সম্পাদক নাজমুল ইসলাম বাবুল, কুমিল্লা শহর বিএনপির সম্পাদক জসিম উদ্দিন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়রের ছোট ভাই কাইউমুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল যুগ্মআহ্বায়ক ওয়াসেক বিল্লাহ, আপুর উদ্দিন টোকন, ওলামাদল ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্মআহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম, পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদল সাংগঠনিক সম্পাদক ইরান, লালমনিরহাট জেলা ছাত্রদলের যুগ্মসম্পাদক বুলবুল আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতা আক্তার হোসেন, পাবনা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি আলী আজমসহ সারাদেশে ৪০০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম শিপন, আশিকুজ্জামান আশিককে ৬ মাস ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ছাত্রদল নেতা তামিম ও ডনকে ১৫ দিনের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের হামলায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চাঁন, খুলনার মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক সেলিম, ছাত্রদল নেতা মো. ফয়সাল, টঙ্গীতে সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল কাইয়ুম সুরুজ, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা আবু আসিফ আহম্মেদ, উপজেলা যুবদল যুগ্মআহ্বায়ক তফসির আলম তুষার, নোয়াখালী ছাত্রদল সভাপতি নুরুল আমিন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমানসহ সারাদেশে ১ হাজার ১০০ জন বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী আহত হয়েছে। অবরোধ কর্মসূচিতে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনায় দ্রুত বিচারসহ নানা আইনে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক সেলিম, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীর, গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবি সিদ্দিকুর রহমানসহ ৪ হাজারের বেশির নেতাকর্মীর নামে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। হবিগঞ্জের মামলায় আসামি করা হয়েছে ৮০০ জনকে। এছাড়া অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর রাজধানীতে বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা কৃষকদল সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু, মোল্লাহাট উপজেলায় যুবদল সভাপতি একরামুল হক সাবু, সম্পাদক জিয়াউর রহমানসহ অনেক নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। এদিকে নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি অলিগলিতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক র‌্যাব, পুলিশ ও শাদা পোশাকের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের। জলকামান ও রায়ট কার টহল দেয় রাজপথে। আতঙ্কিত মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হননি।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কে গোকুলখালী বাজারে কাঠের গুঁড়ি, বাঁশের খোপা ফেলে এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিএনপি। এ সময় যানবাহনে ইটপাটকেল ছোড়ে তারা। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গোকুলখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে ফেরার পথে মোটরসাইকেলের হেডলাইটের আলো কম থাকায় কাঠের গুঁড়ির সাথে ধাক্কা লেগে সৌদি প্রবাসী আলমডাঙ্গার রুইতনপুরের গোলাম দর্জির ছেলে আনোয়ার হোসেন মারাত্মক আহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং ফায়ার সার্ভিস বিক্ষোভকারীদের দেয়া আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরে চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশ গোকুলখালী বাজারে চিৎলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম মুকুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ উর জামান সিজারের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার ফেরিঘাট রোড থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছুলে পুলিশের সাথে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশকর্তৃক ছাত্রদলের সুশৃঙ্খল নিরস্ত্র মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও ঘৃণা জানিয়ে জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, ১৮ দলীয় ঐক্য জোটের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধকে সফল করার জন্য ও এ অবৈধ মহাজোট সরকারের ৫ বছরের সকল দুর্নীতি, লুটতোরাজ, খুন-গুম, বিচার বিভাগ দলীয়করণ, শেয়ারবাজার লুণ্ঠন, পদ্মাসেতু দুর্নীতি, হলমার্ক কেলেঙ্কারী, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের টাকা লুপাটের অপমানের দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য সকল নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে গতকাল অবরোধ চলাকালে জেলা ছাত্রদলের সদস্য তাজ আলম ও দামুড়হুদা থানা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী শাহ’র গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন জানায়।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্মসম্পাদক বিল্লাল হোসেন ও সদর উপজেলা যুবদল নেতা জয়নাল আবেদীনের গ্রেফতারের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কেদারগঞ্জস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাসুদুল হক মাসুদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের যুগ্মআহ্বায়ক শাহজাহান খান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের নেতা সাইফুল ইসলাম সুমন। সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পৌর ছাত্রদল সভাপতি ইমরান মহলদার রিন্টু, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আশিকুল হক শিপুল, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের ১নং যুগ্মসম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুর রহমান তৌফিক, মাহাবুব, বিদ্যুৎ প্রমুখ।প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মনোনয়নপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা কোটমোড়স্থ তাদের কার্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে বের করতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে বলে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। মিছিল করতে না পেরে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করে তারা। কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক চুযাডাঙ্গা জেলা মৎস্যজীবী দলের সেক্রেটারি আবু বক্কর সিদ্দিক বকুলের নেতৃত্বে মিছিল বের করে পণ্ড হলে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আইনুর হোসেন পচা, আরশেদ আলী কালু প্রমুখ।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, অবরোধ সফল করতে মেহেরপুরের বিভিন্ন সড়কের ১১টি স্থানে ভোর থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অবরোধ করেন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। রাজনগর সড়কে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকে ৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। অবরোধের সময় কার্যত জেলার সাথে বিভিন্ন সড়কে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে।

মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের রাজনগরে অবরোধের সময় সকাল ৮টার দিকে পুলিশের সাথে অবরোধকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ ২৩ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ও ১ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল জলিল। জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় সেখানে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের গুলির ঘটনার পর জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা চারদিক থেকে পুলিশকে ঘিরে দিনদত্ত ব্রিজের ওপরে অবরুদ্ধ করে ফেলে। ব্রিজের দু পার্শ্বে রাস্তার পাশের আম গাছ কেটে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজনগর মোড়ে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা আবারো সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এ সময় বাইসাইকেলও চলাচল করতে দেয়া হয়নি। প্রায় সারাদিন ধরেই মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক শহর থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। আমঝুপি ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল জাব্বারের নেতৃত্বে দিনব্যাপি দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষ।

এদিকে সকাল ৭টার একই সড়কের দরবেশপুর মাদরাসার সামনে, বারাদি মোমিনপুর মাধ্যমিক ও বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা কাঠের গুঁড়ি ফেলে। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

এদিকে একই সময়ে মেহেরপুর-কাথুলী সড়কের কায়েম কাটার মোড়ে অবরোধ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। সেখানে ২০/২৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। বিক্ষোভের মধ্যে ২টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ভোর থেকেই মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের বন্দরে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। নেতৃত্বে ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাসুদ অরুন।

সোমবার রাত ১টার দিক থেকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব থেকে খলিশাকুণ্ডি ঘাট এলাকা পর্যন্ত প্রায় দু শতাধিক গাছ কেটে সড়কের ওপরে ফেলে দেয় ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এতে রাত থেকেই মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়ে। সকালে গাংনী উপজেলার পোড়াপাড়া মোড়ে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন। সড়কের ওপরে টায়ার জ্বালানো হয়। গাংনী উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আখেরুজ্জামানসহ জামায়াত বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন। শিবিরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা লাঠি মিছিল করেন। জোটের নারী সমর্থকরা ঝাড়– হাতে করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। একই সড়কের ছাতিয়ান ও বামন্দী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীর। এছাড়াও ভোর থেকেই মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের মুজিবনগর উপজেলার গৌরিনগর মোড়, দায়িরাপুর ও পুরন্দরপুরসহ ৫টি স্থানে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গতকাল ভোর থেকেই বিজিবি মোতায়েন করা হয়। কুষ্টিয়া ৩২ বিজিবি অধিনায়ক মেজর তারিক মাহমুদ সরকারের নেতৃত্বে ৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য বিভিন্ন সড়কে টহল দেয়। গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু সড়কে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করেছে।

ডাকবাংলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা সাধুহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আনামের নেতৃত্বে হরতাল সমর্থনে মিছিল হয়েছে। ডাকবাংল ত্রিমহনী থেকে মিছিলটি শুরু করে বাজারের শুরু করে ডাকবাংলা পুরোনো মাছবাজারে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাধুহাটি ইউনিয়ন সভাপতি মো. খলিলুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাগান্না ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল মামুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াত নেতা অ্যাড. আকবরমুল কবির, সাধুহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সদস্য জাবির খান রুস্তম, থানা যুবদলের সহসভাপতি শাহীন রেজা সোহরাব, ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি ওলিয়ার রহমান, বাজার যুবদলের সভাপতি নাহিদ, ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক রিপন, ছাত্রদলের সিনিয়র সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সেলিম রেজা মিলন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আল আমিন, আফাঙ্গীর, বছির, জমির, আব্দুল গফুর, কবির হোসেন, শামিম প্রমুখ।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহাজান আলীকে পিটিয়ে আহত করেছে অবরোধ সমর্থকরা। এ সময় তার বহনকারী মোটরসাইকেলটিও পুড়িয়ে দেয় তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার সকালে উপজেলার খালিশপুর বাজারের তেলপাম্পের সামনে থেকে তার ওপর এ হামলা করে অবরোধ সমর্থকরা। আহত ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজান আলী একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। জেলার মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর, দারিয়াপুরবাজার ও হুদার মোড়সহ রাস্তায় রাস্তায় গাছ ফেলে এবং আগুন জ্বালিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মীরা এসব সড়কে অবস্থান নেয়। এরপর বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করে। সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারে বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে। এ সময় দুটি ট্রাক ভাঙচুর করে তারা।

এদিকে কোটচাঁদপুর শহরের আখ সেন্টার রেলগেট এলাকায় রেললাইন অবরোধ করে হরতাল সমর্থকরা। দুপুর ১২টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী এ ট্রেনটির হুসপাইপ খুলে দেয়া হয়। দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকে ঈশ্বরদী-খুলনার রেল যোগাযোগ। একই সময় কালীগঞ্জ-চুয়াডাঙ্গা সড়কে কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের কলেজ ও মেন বাসস্টান্ডে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। জেলা সদরসহ সব সড়ক গুলোতে কোনো রকমের ইঞ্জিনচালিত যানবাহন ছেড়ে যায়নি। দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো।

মহেশপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ মহেশপুরে কালীগঞ্জ-জীবননগর মহাসড়কে খালিশপুর নামক স্থানে অবরোধ করে ভোর থেকে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করে। মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় উপজেলার আজমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আজমপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শাহাজান আলীকে মারধর করে তার মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেয় এবং মহাসড়কে মিছিল করতে থাকে। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য বাবু খান, আব্দুর রহমান, মনির মেম্বার, শাহাদাত, মাহফুজ, জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান, জেলা শিবির নেতা ওমর ফারুক, খালিশপুর শিবির সভাপতি রাজু আহাম্মেদ, আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

আমঝুপি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অবরোধের প্রথম দিনে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের আমঝুপি এআরবি কলেজমোড় থেকে দরবেশপুর পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। রাজনগরে জামায়াতের জেলা নায়েব আমির মো. সিরাজুল ইসলাম মাস্টার ও পিরোজপুর ইউপি সদস্য আলিহিমের নেতৃত্বে সড়ক অবরোধ করে তারা। বারাদীবাজারে বিএনপি নেতা হাসেম আলীর নেতৃত্বে ও দরবেশপুর মাদরাসা মোড়ে জেলা তাঁতিদলের সভাপতি আরজুল্লাহ বাবলুর নেতৃত্বে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় রাজনগরে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ণন্ত্রে আনে।

দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী শাহ্ ও ছাত্রদল নেতা তাজ আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, মহাসড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদরাসার সামনে থেকে পিকেটিং করার সময় তাদেরকে এসপির নির্দেশে আটক করে চুয়াডাঙ্গায় ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রদলের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া করে মিছিল বের করে। এতে কিছুটা অশান্ত হয়ে পড়ে দামুড়হুদা উপজেলা সদরের পরিস্থিতি। বাজারের দোকানদাররা এতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দোকান বন্ধ করে রাখে। এ সময় ছাত্রলীগের কিছু কর্মী মহিউদ্দিন নামের এক জামায়াতকর্মীকে মারধর করে। পরবর্তীতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশ উপজেলা শহরে যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে তৎপরতা জোরদার করে।

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি (বাবু খান) সমর্থিতদের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সড়ক পথে বিক্ষোভ শেষে দলীয় কার্যলয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান খোকন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ হাফিজুর রহমানসহ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের সামনে দুটি এবং গাংনী শহরের ট্রাক টার্মিনালের সামনেসহ কয়েকটি স্থানে ৮টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে উজ্জ্বল হোসেন (২৬) নামের এক ট্রাক্টরচালক আহত হয়েছেন। তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উজ্জ্বল হোসেন ইকুড়ি গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে। ট্রাক্টর মেরামতকালে এ ঘটনা ঘটৈ।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে দু মিনিটের ব্যবধানে গাংনী ট্রাকটার্মিনালের পার্শ্বে ও মিতালীর আমবাগানের সামনের সড়কে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। একই সময়ে গাংনী পল্লী বিদ্যুত উপকেন্দ্রের সামনে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে মেহেরপুর শহরের প্রধান সড়কে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায় দুর্বৃত্তরা। সোয়া ৭টার দিকে মহিলা কলেজ মোড় এলাকায় ১টি এবং সাড়ে ৭টার পরপরই ট্রাক টার্মিনালের সামনে একই স্থানে আবার আরেকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিস্ফোরণের ঘটনায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ করে লোকজন এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন। বিকট শব্দে শুধু শহরে নয় বাইরের এলাকাতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে গাংনী পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মেদ আলীর নেতৃত্বে গাংনী শহরে লাঠি মিছিল করা হয়। নেতাকর্মীরা লাঠি হাতে করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল পলাশ, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান ডাবু, জেলা যুবলীগের সহসভাপতি গোলাম সাকলায়েন ছেপু, যুবলীগ নেতা আনিচ্ছুজ্জামান লুইচ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ক্লাবের সভাপতি আশিকুর রহমান আকাশ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রেজা সেন্টু ও ছাত্রলীগ নেতা সিপু, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন লীগের সহসভাপতি জিনারুল ইসলাম দিপুসহ নেতৃবৃন্দ। রাত ৯টা পঞ্চান্ন মিনিটের দিকে হাসপাতালবাজার দোয়েল ক্লাবের সামনে অরো একটি বিস্ফোরণ ঘটে।

এদিকে শহরে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গোটা এলাকা এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা না থাকায় বিভিন্ন মহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বাজারে কয়েকটি স্থানে পুলিশ থাকলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে এতোগুলো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।