হাথুরুর শিষ্যদের হাতেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি

স্টাফ রিপোর্টার: ফেবারিটের তকমা নিয়ে টুর্নামেন্টটি শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু আরেকটি ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে গিয়ে পরাজয় বরণ করে নিতে হল টাইগারদের। টাইগারদের সদ্য সাবেক কোচ হাথুরুসিঙ্গকে নিয়ে সিরিজের আগে কতো কথা; সেই হাথুরুই ‘খর্বশক্তির’ শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে টুর্নামেন্টে বাজিমাত করে দিলো। ফাইনালে বাংলাদেশকে ৭৯ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ট্রফি উঠলো হাথুরুর বর্তমান শিষ্য চান্দিমাল বাহিনীর হাতে।

গতকাল শনিবার দুপুরে ফাইনাল ম্যাচে মিরপুর স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দানুস্কা গুলনাতিলকার উইকেট তুলে ওপেনিং জুটি ভেঙেছিলেন মিরাজ। সেই মিরাজের পরবর্তী ওভারেই ২৪ রান করেছিলেন কুশল মেন্ডিস। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে দলীয় ৪২ রানে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠা কুশল মেন্ডিসকে সাজঘরে ফেরত পাঠান অধিনায়ক মাশরাফি। মাত্র ৯ বলে দুটি চার ও তিনটি ছক্কার মারে ২৮ রান করেন তিনি।

৪২ রানের মধ্যে প্রথম দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে ছিলো লঙ্কানরা। সেখান থেকে উপুল থারাঙ্গা ও নিরোসান দিকবেলার তৃতীয় উইকেট জুটি লঙ্কানদের পথ দেখায়। তৃতীয় উইকেটে এই দুজন ৭২ রানের দুর্দান্ত একটি জুটি গড়েন। তবে সাইফ ২৪তম ওভারের পঞ্চম বলে নিরোসান দিকবেলার উইকেটটি তুলে নেন। আউট হওয়ার আগে ৫৭ বলে চারটি চারের মারে ৪২ রান করেন দিকবেলা। দলীয় ১১৩ রানে দিকবেলা আউট হওয়ার পর চতুর্থ উইকেটে থারাঙ্গা-চান্দিমাল জুটি বেঁধেছিলেন। ৪৫ রানেই থামে সেই জুটিও। ৫৬ রান করা উপুল থারাঙ্গাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান মুস্তাফিজ। সবশেষ রুবেলের শিকার হলেন থিসারা পেরেরা।

৩৬ ওভারের তৃতীয় বলে উপুল থারাঙ্গাকে আউট করে বাংলাদেশের দ্রুততম ৫০ উইকেট শিকারি হয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। একমাত্র হাফসেঞ্চুরিয়ান এই ব্যাটসম্যানকে মুস্তাফিজ ফেরত পাঠানোর পরই শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনে আঘাত হানেন আরেক পেসার রুবেল হোসেন। চতুর্থ উইকেট পতনের পর ইনিংসে ৫ রান যোগ হতেই থিসারা পেরেরাকে (২) সাজঘরের পথ ধরান রুবেল। ৪৮ ওভারের তৃতীয় বলে গলার কাটা চান্দিমালকে (৪৫) বোল্ড করেন রুবেল। ৪৯ ওভারের দ্বিতীয় বলে ধনাঞ্জয়াকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ।

লঙ্কান দল নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব উইকেটে হারিয়ে ২২১ রান সংগ্রহ করে। ২২২ রানের জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মাশরাফিবাহিনী। টাইগারদের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে তামিম ১৮ বলে মাত্র ৩ রান করেন আউট হন। মিথুন ২৭ বলে ১০ রান  ও সাব্বির রহমান ৯ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর হাল ধরেন মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ। দুইজনে মিলে চতুর্থ উইকেটে ৫৮ রানের জুটিও গড়ে তোলেন। কিন্তু ২৩ তম ওভারের চতুর্থ বলে প্রিয় শট সুইপ খেলতে গিয়ে থারাঙ্গার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন মুশফিক (২২)। মুশফিকের বিদায়ের পর মাহমুদুল্লাহ চেষ্টা করলেও সঙ্গ দেয়ার কেউ ছিলো না। এরপর আর কোনো ব্যাটসম্যানই দু’অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। নবম উইকেট হিসেবে মাহমুদুল্লাহ (৭৬) আউট হলে পরাজয় বরণ করতে হয় টাইগারদের। ফিল্ডিং করার হয় আহত হওয়ায় সাকিব আল হাসান ফাইনালে ব্যাট হাতে নামতে পারেননি।

শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে এই ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করে বাংলাদেশ। যেখানে তিনটি দলের মধ্যে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। আজকের এই ফাইনাল ম্যাচে জিততে পারলে এটিই হতো বাংলাদেশের কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টে প্রথম শিরোপা।