সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এ ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। একই অবস্থা নিউজিল্যান্ডেরও। তবে আগামী পরশু যদি ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। তবে বাংলাদেশের বা নিউজিল্যান্ডের জয় কোনো কাজেই আসবে না। তাই এ ম্যাচে জয় দিয়ে নিজেদের আশা বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি পরের দিন অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়ের প্রার্থনা করতে হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডকে। কার্ডিফে সোফিয়া গার্ডেন্সে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের লড়াই।

প্রথম দু ম্যাচের দু টিই জিতে ‘এ’ গ্রুপ থেকে আগেভাগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। তবে এই গ্রুপের বাকী তিন দলেরও সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ২ ম্যাচে অংশ নিয়ে বৃষ্টিতে দু’টি পরিত্যক্ত হওয়ায় ২ পয়েন্ট পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার জন্য সমীকরণটা সহজ। আগামী ১০ জুন গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংলিশদের বিপক্ষে জিতলেই সেমিতে জায়গা নিশ্চিত হবে অস্ট্রেলিয়ার। আর অসিরা হেরে গেলে সুযোগ তৈরি হবে ১ পয়েন্ট করে সংগ্রহে থাকা বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের। নিজেদের মুখোমুখিতে যে দল জিতবে তারাই সেমির টিকিট পাবে।

টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত শুরুর সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ৩০৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় টাইগাররা। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেন বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। তার ১২৮ রান স্বত্বেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ৮ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন তামিম। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচে ৯৫ রানেই আটকে যান এই বাঁ-হাতি ওপেনার। তারপরও ১৮২ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ১৮৩ রানের লক্ষ্যে খেরতে নেমে ১৬ ওভারে ১ উইকেটে ৮৩ রান তুলেও ফেলে অস্ট্রেলিয়া। এরপরই নামে বৃষ্টি। ফলে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। নিজেদের ইনিংসে মোট ২০ ওভার খেলতে পারলেই বৃষ্টি আইনে ম্যাচটি জিততে পারতো অস্ট্রেলিয়া। কারণ বৃষ্টি আইনে বেশ এগিয়েই ছিলোও অসিরা। কিন্তু ৪ ওভার কম খেলাতে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। আর এই বৃষ্টির কারণেই সেমিতে খেলার আশা এখনো বেঁচে আছে বাংলাদেশের।

সেই আশাতে আরও প্রাণ দিতে হলে নিউজিল্যান্ডকে শেষ ম্যাচে হারাতেই হবে বাংলাদেশকে। সাম্প্রতিক রেকর্ড সাহস যোগাচ্ছে টাইগারদের। গত ২৪ মে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে ডাবলিনে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে নিউজিল্যান্ডের ঐ দলে ছিলেন না কেন উইলিয়ামসন, মার্টিন গাপটিল, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও এডাম মিলনে। এদের সকলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আছেন। তারপরও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি তামিম, ‘দেশের মাটিতে আমরা বেশ কয়েকবারই পূর্ণ শক্তির নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছি। তবে আয়ারল্যান্ডে কিউইদের পুর্নশক্তির দল ছিলোও না। তাদের অনেক মানসম্মত খেলোয়াড় রয়েছে। যদি আমরা আবারো ফলাফলের পুনরাবৃতি ঘটাতে চাই তবে আমাদের সেরাটাই খেলতে হবে।’

কার্ডিফের ভেন্যুও বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করছে। কারণ এই ভেন্যুতেই ২০০৫ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বসেরা দলকে প্রথমবারের মত হারিয়েছিল টাইগাররা। ওই ম্যাচের ফল থেকেও নিজেদের চাঙ্গা করছে মাশরাফির দল। তাই কার্ডিফে আরও একটি জয় পেলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য মহামূল্যবান কিছু। কারণ এই জয়েই ভাগ্যের জোড়ে সেমিফাইনালের টিকিটও পেয়ে যেতে পারে টাইগাররা। এজন্য তাকিয়ে থাকতে হবে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের দিকে এবং প্রার্থনা করতে হবে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়ের।

পক্ষান্তরে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করে নিউজিল্যান্ড। এবারের আসরে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ম্যাচটি পরিত্যক্ত বৃষ্টির কারণে। অবশ্য ওই ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছিলো কিউইরা। নিশ্চিত জয় থেকে বঞ্চিত হয় তারা। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের পরের ম্যাচে ব্ল্যাকক্যাপসদের পারফরমেন্স ছিলো হতাশাজনক। ফলে ৮৭ রানে ম্যাচটি হারতে হয় তাদের।

তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিতে নতুনভাবে শুরু করতে চান নিউজিল্যান্ডের ওপেনার মার্টিন গাপটিল, ‘আমাদের সামনে এটি একটি নতুন ম্যাচ। নতুন লক্ষ্য, জিততেই হবে আমাদেরকে। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্যই মাঠে নামবো আমরা।’