সুখ স্মৃতিকে সঙ্গী করে ঢাকার পথে মাশরাফিরা

 

স্টাফ রিপোর্টার: সেই বার্মিংহাম থেকেই গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ দল ঢাকার উদ্দেশে বিমানে চড়েছে। কিন্তু চড়ার আগে নিজেদের ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা সাফল্য দেখিয়েছে। খেলেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসরে সেমিফাইনাল। যা ছিল আবার আইসিসির যে কোনো আসরে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল খেলা। ভারতের কাছে ৯ উইকেটে হেরে যেখানে থেমে যায় বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা।
এই বার্মিংহাম থেকেই বাংলাদেশের ফ্লাইট ছিল ১১ তারিখ। আয়ারল্যান্ড থেকে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে বার্মিংহামে আসাতে বাংলাদেশের ফিরতি ফ্লাইট ছিল বার্মিংহাম থেকেই। এদিকে আবার বাংলাদেশ সেমিতে খেলবে সে রকম সম্ভাবনা ছিল কম। কিন্তু হঠাৎ করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিশ্চিত হারা ম্যাচ বৃষ্টিতে ড্র হওয়ার কারণে এক পয়েন্ট পেয়ে সেমিতে খেলার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখে। ৯ জুন কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের কাজটি করে রাখলেও সেমিতে খেলা নিশ্চিত হয়নি। ১০ জুন ওভালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের সেমিতে খেলা। ইংল্যান্ড জিতলে ‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে বাংলাদেশ খেলবে সেমি। সেই সেমি আবার অনুষ্ঠিত হবে বার্মিংহামে। তাই বাংলাদেশের বার্মিংহামে যাওয়া চূড়ান্ত হয়ে যায়। হয় সেমিতে খেলা, না হয় দেশের পথে বিমানে চড়া। পরে বাংলাদেশ সেমিফাইনালই খেলে। কিন্তু সেমিতে জিততে না পারার কারণে তাদের গতকাল সেই বার্মিংহাম থেকেই ঢাকার পথে রওনা হতে হয়েছে ইংল্যান্ড সময় দুপুর ২.৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৭.৩০ মিনিট)। মাঝের কয়টি দিন দেশবাসীকে সুখ সাগরে রেখে নিজেদের ক্রিকেটে ইতিহাসে সেরা সাফল্য দেখায়। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল আটটার দিকে তারা বাংলাদেশে পৌঁছবে।
সেমিতে হারের পর গতকাল ইংল্যান্ড সময় রাত ৯.৩০ মিনিটে ছিল বাংলাদেশের ফ্লাইট। পরে তা এগিয়ে আনা হয় দুপুর আড়াইটায়। কিন্তু দলের সবাই এক সঙ্গে যাননি সিট খালি না থাকাতে। রাতের ফ্লাইটে যাবেন সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম ও বিসিবির পরিচালক আকরাম খান। এ ছাড়া ইমরুল কায়েস থেকে গেছেন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। তিনি যাবেন ২০ জুন। মুশফিক যাবেন লন্ডন হয়ে আরো পরে।
নিজেদের ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা সাফল্য দেখালেও সেমিতে কিন্তু বাংলাদেশ খুব একটা ভালো করতে পারেনি। কিন্তু তাই বলে কেউ হতাশ নন। খেলার আগেও যেমন প্রবাসীরা ভিড় করেছিলেন হোটেলে, তেমনি গতকালও। সুযোগ পেলেই তারা ক্রিকেটারদের কাছে গিয়ে ছবি তুলেছেন। এদিকে হোটেল ছাড়ার আগে কোচ হাথুরুসিং সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, টুর্নামেন্টে সামগ্রিকভাবে দলের খেলাতে সন্তুষ্ট হলেও সেমিফাইনালের খেলাতে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। নিজেদের খেলাটা ছেলেরা খেলতে পারেনি বলে জানান তিনি। সিনিয়ররা ভালো করলেও জুনিয়ররা ভালো করতে না পারাতে হতাশা ঝরেছে কোচের কণ্ঠে। তবে তিনি এসব তরুণকে নিয়ে আশাবাদী বলে জানান। তিন নম্বরে সাব্বিরকে আরো উন্নতি করতে হবে বলে মনে করেন কোচ। সাব্বিরকে তিনি এখানে আরো সময় দিতে চান। তরুণদের সমালোচনা করলেও তিনি এই দলকেই সেরা হিসেবে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটাই বাংলাদেশের সেরা দল। এরাই সেরা ক্রিকেটার। এর বাইরে ভালো ক্রিকেটার আর নেই।’
এদিকে এই দল নিয়ে আশাবাদী মাশরাফিও। সেমিফাইনাল শেষে তিনি বলেন, ‘২০১৯-এ আমরা আরো ভালো করব। শারীরিক দিক থেকে বলুন কিংবা স্কিল, আমরা খারাপ নই। তবে এসব ম্যাচের জন্য মানসিকভাবে আরো দৃঢ় হতে হবে। আমাদের আরো শিখতে হবে। এই তরুণরাই আবার ফিরবে ২০১৯ বিশ্বকাপে। সেবার আরো ভালো করবে। একবার মানসিকভাবে প্রস্তুত হলে, যে কোনো কিছু অর্জন সম্ভব।