সাকিবকে ছেড়ে দেবে কোলকাতা নাইট রাইডার্স

মাথাভাঙ্গা মনিটর: ২০১৮ আইপিএলের খেলোয়াড় নিলামের তারিখ ঘোষণা হলো। ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি হবে নিলাম। আর ৪ জানুয়ারির মধ্যে আইপিএলের আট দলকে জানিয়ে দিতে হবে কোন কোন খেলোয়াড়কে তারা রেখে দিচ্ছে। এবার মাত্র ৫ জন করে খেলোয়াড় রেখে দেয়ার সুযোগ পাচ্ছে দলগুলো। মাত্র দুজন বিদেশি থাকতে পারবেন পুরোনো দলে। এ কারণে প্রশ্ন উঠছে, সাকিব আল হাসানকে কি রেখে দেবে কোলকাতা নাইট রাইডার্স? নাকি সাকিবকে আবার যেতে হবে নিলামের হাতুড়ির নিচে? ২০১১ সাল থেকেই কেকেআরের হয়ে খেলছেন সাকিব। এমনও হয়েছে, আইপিএলের একমাত্র বাঙালি শহরের প্রতিনিধির একমাত্র বাঙালি খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের জার্সির পর কেকেআরের জার্সিতেই সাকিব সবচেয়ে বেশি সমার্থক। কিন্তু এবার কি ঠিক থাকবে ছবিটা?

গতবারও সাকিবকে তার ২ কোটি ৮০ লাখ রুপির দাম শোধ করে রেখে দিয়েছিলো কেকেআর। নিলামের আগে মরনে মরকেল, কলিন মানরো, জেসন হোল্ডারদের মতো বিদেশি তারকাদের ছেড়ে দিলেও সাকিবকে ধরে রেখেছিলো দলটি। কিন্তু গতবারের চেয়ে এবারের হিসাবটা অন্য। গতবার কেকেআর ১৪ জন খেলোয়াড় ধরে রাখতে পেরেছিল। এবার সেই সুযোগ নেই।

এবার আইপিএলে ফিরে আসছে দুই বছরের জন্য নির্বাসন কাটানো দুই দল চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালস। রাইজিং পুনে ও গুজরাট লায়নসকে বাদ পড়তে হচ্ছে। এবার তাই অনেক ওলটপালট আসবে আইপিএলের দলগুলোতে। আইপিএলের পরিচালনা কমিটিও নিয়ম করে দিয়েছে, ৫ জনের বেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে না দলগুলো। তাতে সর্বোচ্চ তিনজন দেশি, দুজন বিদেশি বা দুজন আনক্যাপড (এখনো ভারতের হয়ে অভিষেক হয়নি এমন) খেলোয়াড় রাখতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। অবশ্য দলগুলোকে একটি বাড়তি সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নিলামে নিজের দলের ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়কে আবার নিতে ব্যর্থ হলে ওই খেলোয়াড়টিকে সর্বোচ্চ যে দামে কেনা হবে, সেই একই দামে কিনতে চাইলে নিলামের পর খেলোয়াড়টির আগের দলকে সুযোগ দেয়া হবে। কিন্তু এভাবেও সর্বোচ্চ তিনজনের বেশি খেলোয়াড় কিনতে পারবে না ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এই নিয়মটিকে বলা হচ্ছে রাইট টু ম্যাচ (আরটিএম)।

এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার, সর্বোচ্চ ৫ জন খেলোয়াড়কে দলগুলো রেখে দিতে পারলেও নিলামের আগে তারা রাখতে পারবে সর্বোচ্চ তিনজনকে। আর নিলামের পর আরটিএম ব্যবহার করে তারা রাখতে পারবে দুজনকে। এভাবে মোট পাঁচজন। কোনো দল যদি নিলামের আগে দুজনকে রেখে দেয়, নিলামের পর তারা তিনবার আরটিএম ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। আবার কোনো দল যদি একজনকেও রেখে না দেয়, তবুও তিনবারের বেশি আরটিএম ব্যবহারের সুযোগ তারা পাবে না।

ফলে নিলামের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সর্বোচ্চ তিনজন বা দুজন করে খেলোয়াড় রেখে দেবে। এখন দলগুলোকে ঠিক করতে হবে তারা রাখবে কাকে কাকে। এর মধ্যে দেশি তারকা কজন হবে, বিদেশি কজন। ধরা যাক, কেকেআর একজন দেশি তারকা আর দুজন বিদেশি তারকাই রেখে দিলো, সেখানে কি সাকিব থাকবেন? নাকি তাকে ছেড়ে দেবে কেকেআর?  এবারের এই নিয়মটার কারণে দলগুলো কোন কোন খেলোয়াড়কে রেখে দিতে পারে, এ নিয়ে বেশ গুঞ্জন চলছে। ভারতের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ব্লগগুলোতে যতটুকু বিশ্লেষণ মিলল, তাতে সাকিবকে রেখে দেয়ার সম্ভাবনাই ক্ষীণ মনে হচ্ছে। গতবার সাকিবকে কেকেআর রেখে দিলেও মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ওই ম্যাচে ১ রানে অপরাজিত ছিলেন, বল হাতে ৩ ওভারে ৩১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য।

তার মানে এমন নয়, সাকিবকে কেকেআরে দেখা যাবে না আর। নিলামে তাকে আবার কেনার সুযোগ তো কেকেআরের থাকলই। এমনকি নিলামে হেরে গেলেও তারা আরটিএম ব্যবহার করে সর্বোচ্চ দর দিয়েও সাকিবকে কেনার অগ্রাধিকার পাবে। এখন কেকেআর সাকিবকে পেতে কতোটা উন্মুখ, সেটাই প্রশ্ন। এই বিপিএলেও সাকিব বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত, ব্যাটিংয়ে শুরুতে না হলেও ঝলসে উঠেছিলেন শেষের দিকে। তার মতো অলরাউন্ডারকে কোনো না কোনো দল তো কিনবেই। এখন সেই দলটি কেকেআরই হবে, নাকি সামনের আইপিএলে অন্য জার্সিতে সাকিবকে দেখা যাবে; সেটাই দেখার।