রাজশাহীকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো ঝিনাইদহ

সেরা খেলোয়াড় ঝিনাইদহের মরু মোহাম্মদ।

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ঝিনাইদহ জেলাদল ১-০ গোলে রাজশাহী জেলা দলকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা নতুন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথমার্ধের ২০ মিনিট পর্যন্ত উভয় দলের ঢিলেঢালা আক্রমণ যখন দর্শকদের মন ভরাতে পারছিলো না। তখন হঠাৎ করেই দুই দলের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে খেলায় যেন প্রাণ ফিরে আসে। তখন থেকেই মুহুর্মুহুর করতালিতে দর্শকরা কৃপণতার খোলস ছেড়ে উভয় দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে দুই দলের গোল এরিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ আসে এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু গোল নামক সেই হরিণটাকে কোনোদলই নিজেদের করে নিতে পারেনি। রেফারি শেখ কামাল আহমেদের লম্বা বাঁশিতে যখন প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়। তখন মাঠের দর্শকরা বলতে থাকে গত পরশু জয়পুরহাট ও নাটোরের মধ্যকার টাইব্রেকারের মতই কি খেলার ফলাফল নির্ধারণের অপেক্ষা করতে হবে?। না সে ধারণা ভুল প্রমাণ করে খেলার ৮৪ মিনিটে ঝিনাইদহের ৭নং জার্সিধারী খেলোয়াড় কায়েসের উড়ন্ত কর্নার কিকে মাথা বাধিয়ে ঝিনাইদহ জেলা দলের ঘানা থেকে আগত খেলোয়াড় মরু মোহাম্মদ একটি দর্শনীয় গোল করে বসেন। সেটিই ছিলো গতকালের ম্যাচে একমাত্র এবং জয়সূচক গোল। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বিবেচনা করে ঝিনাইদহ জেলা দলের বিদেশি খোলোয়াড় মরু মোহাম্মদের হেডিঙে দেয়া দর্শনীয় গোলটি বিচারকদের নজর কাড়ে। সেইসূত্রে দ্বিতীয় বারের টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটিও জিতে নেন মরু মোহাম্মদ। গতকালের মতো সেরা খেলোয়াড় বিচারের দায়িত্বে ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফকরুল ইসলাম, কৃতি ফুটবলার মাহমুদুল হক লিটন ও গিয়াস উদ্দিন পিনা। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সেরা খেলোয়াড়ের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ। দর্শকদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে জীবননগরের উসমান পান জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত একটি আকর্ষণীয় ফুটবল।
গতকাল ভিআইপি গ্যালারিতে অন্যদের সাথে খেলা উপভোগ করেন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক জাতীয় ক্রীড়া সংগঠক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নওরোজ মো. সাঈদ, পাবলিক প্রসিকিউটর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. শামসুজ্জোহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল তরিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা সার্কেল কলিমুল্লাহ, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উপপরিচালক জাফর ইকবালসহ পুলিশ প্রশাসন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও ডিএফএ’র কর্মকর্তারা। গতকালের খেলাটি পরিচালনা করেন শেখ কামাল আহম্মেদ, হুমায়ুন কবীর, মোক্তার হোসেন মিঠু ও সৈয়দ মাসুদুর রহমান। খেলার ধারা ভাষ্যে ছিলেন সাংবাদিক ইসলাম রকিব, এবি সিদ্দিক ও শামীম খান। আজ একই মাঠে বিকেল ৩টায় ৪র্থ ও শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে যশোর মুখোমুখি হবে সিরাজগঞ্জ জেলা দলের বিপক্ষে।
আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর দুটি সেমিফাইনাল এবং ২৭ অক্টোবর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা উপভোগের জন্য সকল দর্শককে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের আগেই গ্যালারিতে প্রবেশ করতে হবে। মূল মাঠের মধ্যে কোনো দর্শকের প্রবেশ করতে দেয়া হবে না (অনুমোদিত ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের জন্য এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য নয়)। দর্শক চাপ সামলাতে চুয়াডাঙ্গা ডিশ ক্যাবল ও চুয়াডাঙ্গা টাউনমাঠ, ভি.জে স্কুল (চাঁদমারী) মাঠ ও স্টেডিয়ামের বাইরে বড় পর্দায় সরাসরি খেলা দেখানো হবে। দর্শকদের নিয়ে আসা সাইকেল, মোটরসাইকেল জেলা যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও জাফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে রেখে পায়ে হেঁটে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া আলমসাধু, নসিমন, করিমন, ভটভটি পুলিশের নির্ধারিত জায়গায় রেখে আসতে হবে। স্টেডিয়াম এলাকায় কোনো টিকেট বিক্রি করা যাবে না, আগে থেকেই টিকেট কাটতে হবে। পাস ছাড়া ভিআইপি গ্যালারিতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। স্টেডিয়াম সংলগ্ন প্রধান সড়ক কোনো অবস্থাতেই যানজট করা যাবে না। প্রয়োজনে বাইপাস সড়ক ব্যবহার করতে হবে।