মন্দের ভালো সঙ্গে নিয়ে সামনে তাকিয়ে বাংলাদেশ

মাথাভাঙ্গা মনিটর: অন্যের যন্ত্রণা দেখলে নাকি নিজের কষ্ট কিছুটা হলেও কমে। বাংলাদেশ দলও নিজেদের দুঃখের উপশম পেয়েছে খানিকটা। একই দিন, প্রায় একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হারটাও তো কম বিস্ময়কর নয় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে যন্ত্রণাদয়ক হারের পর হোটেলে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচের খবর জেনেছেন অনেকেই। ৫ উইকেট হাতে নিয়েও শেষ ওভারে ৭ রান করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা মনে করিয়ে দিলেন ক্রিকেটের চিরন্তন আপ্ত বাক্য, ‘ক্রিকেট খেলাটায় আসলেই যে কোনো কিছুই হতে পারে।’

অবশ্য যাবতীয় ক্রিকেটীয় অনিশ্চয়তাকে মাথায় রাখলেও প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের হারটি অবাক করার মতো। নবম উইকেটে টর্নেডোর গতিতে ৯৩ রান তুলে জয়ের ঘটনা আর কটি আছে ক্রিকেটে! প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও এমন হার দুঃস্বপ্নের। তবে সেই দুঃস্বপ্ন ভুলে যেতে চাইছে না বাংলাদেশ দল। গতকাল রোববার সকালেই বার্মিংহাম ছেড়ে বাসে লন্ডনে রওনা হয়েছে দল। শহর ছেড়ে গেলেও এই ম্যাচকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান অধিনায়ক।

ম্যাচটি মানে ম্যাচের স্মৃতি, ম্যাচের শিক্ষা। প্রস্তুতি ম্যাচ মানেই শেখার সুযোগ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিও বাংলাদেশকে দিয়েছে কঠিন এক শিক্ষা। ক্রিকেটে শেষের আগে শেষ বলে কিছু নেই। ম্যাচ শেষে সংবদ সম্মেলনে ইমরুল কায়েস বলেছিলেন, তারা ধরেই নিয়েছিলেন ম্যাচ প্রায় জিতে গেছেন। অধিনায়কও বললেন একই কথা। শোনালেন নিজের ও দলের অন্যদের উপলব্ধির কথাও। ‘ম্যাচটা যে অবস্থায় ছিলো, বেশিরভাগ সময়ই হয়তো আমরা বা যে কেনো দল এখান থেকে সহজেই জিতবে। তবে মাঝে মঝে যে ব্যতিক্রমও হতে পারে, সেটি এই ম্যাচে বুঝতে পেরেছি আমরা। এরকম কিছু হয় বলেই ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। আমরা হয়ত সেটি সবসময় বলি, কিন্তু মাঠে মনেও রাখা উচিত সবসময়।’ পাকিস্তান ম্যাচ থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা এটিই। হারের মাঝে এটিকেই মন্দের ভালো মনে করছেন অধিনায়ক। ‘হার তো কখনোই ভালো কিছু নয়, সেটি প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও। আবার এটাও সত্যি, প্রস্তুতি ম্যাচে জয়-হারের চেয়ে নিজেদের চেনা, বোঝাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেদিক থেকে এভাবে হারাটা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা। মূল টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এটা হওয়ায় আমাদের জন্য ভালো হলো।’ ‘আমরা বুঝতে পারছি মানসিকতায় কোথায় আরও বদল আনতে হবে। ক্রিকেটীয় দিক থেকেও কোথায় কোথায় আরও ভালো করা জরুরি। ফিল্ডিংটা যেমন ভালো করতেই হবে। এতগুলো ক্যাচ মিস করার পরও ম্যাচ জিতলে হয়ত ফিল্ডিংটা আড়ালে পড়ে যেতো। এখন আমরা জানি ফিল্ডিং আরও অনেক ভালো করতে হবে।’ জিতলে প্রস্তুতি ম্যাচটি হতে পারত আরও জোরে ছোটার রথ। আয়ারল্যান্ড থেকে বয়ে আনা আত্মবিশ্বাসে যোগ হতো নতুন হাওয়ার দম। তবে হারের পরও এই ম্যাচকে সামনে এগোবার পাথেয় হিসেবেই ভাবছে দল। শেষের আগে শেষ নয়, এই শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলা!