বড় দলগুলোর বিপক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ হারাচ্ছে বাংলাদেশ?

মাথাভাঙ্গা মনিটর: তিন মোড়ল আর সেভাবে নেই। তবে তিন মোড়লের প্রস্তাবিত বড় পরিকল্পনাগুলোর একটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হতে চলেছে। টেস্ট ক্রিকেটকে দু স্তরে ভাগ করে ফেলতে চায় আইসিসি। আর তা করা হলে বাংলাদেশের মতো ৱ্যাঙ্কিংয়ের নিচু সারির দলগুলোকে বেশির ভাগ ম্যাচ খেলতে হবে আইসিসির উঠতি সদস্যগুলোর সাথে। ২০১৯ সাল থেকে এই দ্বিস্তরের টেস্ট চালু হতে পারে বলে আভাস আছে আইসিসির কথায়। টেস্ট ক্রিকেট থেকে আইসিসির আয় কমে যাচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেট দর্শকও হারাচ্ছে, সেটা মাঠে তো বটেই, টিভিতেও। ক্রিকেটের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাদী ও অভিজাত এ লড়াইয়ের আকর্ষণ ধরে রাখতে অনেক দিন ধরেই ভাবছে আইসিসি। এই পরিকল্পনাতেই এসেছে দুই স্তরের ভাবনা। এতে করে ‘রেলিগেশন’ ও ‘প্রমোশন’ ব্যবস্থা থাকবে। বর্তমানে একটা নির্দিষ্ট সময়ে আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা দলকেই টেস্ট চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

দেয়া হয় সেই গদার মতো​ দেখতে ট্রফিটা, সাথে বিপুল অঙ্কের প্রাইজমানি। কিন্তু এখনকার পদ্ধতির সমস্যা হলো, এখানে প্রতিটি দল সমান সুযোগ পায় না। সমতাপূর্ণ হোম-অ্যাওয়ে সিরিজও আয়োজন হয় না। যেমন বাংলাদেশের সাথে নিজেদের মাটিতে টেস্ট সিরিজে খেলতে ভারত একদমই আগ্রহী নয় এখন পর্যন্ত। যদি না ব্যবসায়িক বা আর্থিক দিক দিয়ে এই দুই দলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজের চিত্রটা বদলায়। আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ ​রিচার্ডসন বলেছেন, আশাকরি, আমরা এ বছরের শেষের দিকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো কাঠামো কী হবে। আপনি যদি সত্যিকারের একটা টেস্ট চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করতে চান, তাহলে আপনাকে এমন একটা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে, যেখানে প্রতিটি দল সমান সুযোগ পায়। এর মানে হলো সমানসংখ্যক ম্যাচ, হোম আর অ্যাওয়েতেও, যাতে করে লিগ শেষে আপনি ঠিক করতে পারেন, কার মাথায় উঠবে চ্যাম্পিয়নের মুকুট। এখন যেসব সফর ও সম্প্রচার চুক্তি আছে, তাতে করে আমরা ২০১৯ সালের দিকে এটি শুরুর চিন্তা করতে পারি। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান ১০টি টেস্ট দলকে সাত-তিন। এ দু ভাগে ভাগ করা হবে। ৱ্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ সাতটি দল প্রথম স্তরে পরস্পরের সাথে খেলবে। ৱ্যাঙ্কিংয়ের শেষ তিনটি দল খেলবে দ্বিতীয় স্তরে, যেখানে তাদের সাথে যুক্ত হবে হবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের দু ফাইনালিস্ট। ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে আয়ারল্যান্ড-আফগানিস্তানের মতো আইসিসির সহযোগী দেশগুলো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে।

নির্দিষ্ট সময় পর প্রথম স্তরে থাকা শীর্ষ দল হবে চ্যাম্পিয়ন আর সাত নম্বর দল নেমে যাবে দ্বিতীয় স্তরে। আর দ্বিতীয় স্তরের শীর্ষ দল উঠে আসবে প্রথম স্তরে। দুই বছর ধরে পুরো একটি লিগ চলবে।
বর্তমানে টেস্ট ৱ্যাঙ্কিংয়ের শেষ তিনটি দল হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। দু স্তরের এই টেস্ট চালু হলে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোর বিপক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ থাকবে না বাংলাদেশের।