বিশ্বকাপ শেষ নেইমারের

বিশ্বকাপ শেষ নেইমারের

মেরুদণ্ডের কশেরুকা বা অস্থিসন্ধির চোটে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষই হয়ে গেল নেইমারের। ব্রাজিলিয়ান দলের চিকিত্সক রদ্রিগো লাসমার নিশ্চিত করেছেন, এ বিশ্বকাপে আর খেলা হচ্ছে না ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের।

ঘটনাটা গত রাতে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে। মাঝ মাঠে বল দখলের জন্য লাফিয়ে উঠেছিলেন হুয়ান ক্যামিলো জুনিগা। কলম্বিয়ার এই ডিফেন্ডারের অবতরণটা সুখকর হয়নি ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের জন্য। জুনিগার হাঁটুর আঘাতে মাটিতে ছিটকে পড়েন নেইমার। সঙ্গে সঙ্গেই চোখে মুখে ফুটে ওঠে প্রচণ্ড ব্যথার চিহ্ন। ৮৮ মিনিটে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়। এক মিনিট সময়ও নষ্ট না করে নেইমারকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় ফোর্তালেজা হাসপাতালে। এ সময় হাসপাতালের বাইরে জমায়েত হন অগণিত নেইমারের ভক্ত। ‘ফোর্সা নেইমার’ বা ‘শক্ত হও নেইমার।’—স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে হাসপাতালের চারপাশ।

ব্রাজিলিয়ান দলের চিকিত্সক রদ্রিগো লাসমার ব্রাজিলিয়ান টিভিকে জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের টেবিলে যাওয়ার মতো গুরুতর আঘাত নয়। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার মেরুদণ্ডের তৃতীয় কশেরুকার কাছে ভাঙন দেখা গেছে। ভেঙে যাওয়া কশেরুকা সারিয়ে তুলতে নিরবচ্ছিন্ন বিশ্রাম প্রয়োজন। এরপরেই তিনি যোগ করেন ব্রাজিল দলের জন্য শঙ্কার খবরটি, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে সে এই বিশ্বকাপে আর খেলছে না। সেরে উঠতে কয়েক সপ্তাহের বিশ্রাম প্রয়োজন নেইমারের।’
ব্রাজিলের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় দুঃসংবাদ। পর পর দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে খেলতে পারবেন না দলের রক্ষণভাগের অন্যতম পুরোধা অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। আক্রমণভাগেও নেইমারের অনুপস্থিতি বেশ ভালোই ভোগাবে সেলেসাওদের। বিশ্বকাপে নেইমার খেলেছেন পাঁচটি ম্যাচে, গোল করেছেন চারটি। ফ্রেড-জো-অস্কারদের নিষ্প্রভতার মধ্যে নেইমার প্রায় একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন ব্রাজিলের আক্রমণভাগকে। তারকা এই ফুটবলারের অনুপস্থিতি যে স্বাগতিকদের বেশ বড় ধাক্কা দেবে সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।
এর আগে চিলির বিপক্ষের ম্যাচটিতেও অনেকবার ট্যাকলের শিকার হয়ে হাঁটুতে আঘাত পেয়েছিলেন নেইমার। যার ফলে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটিতে খেলা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছিল এই তারকা ফুটবলারের।
এমনটা যে হতে পারে সেটা নাকি আগে থেকেই আঁঁচ করতে পেরেছিলেন স্কলারি। তিনি বলেছেন, ‘এটা সবাই জানে নেইমার আক্রমণের শিকার হবে। তবে আমি মনে করি না যে এই ফাউলটি ইচ্ছা করে করা হয়েছে। সে (হুয়ান) হয়তো বলটি থামাতেই এসেছিল। এখন পরিস্থিত অনুযায়ী আমাদের যা করার আমরা করব এবং অবশ্যই একটি অসাধারণ খেলা উপহার দেব।’ কে জানে, হয়তো আগাম কোনো পরিকল্পনাও করে রেখেছেন ‘বিগ ফিল’। তবে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য সেটা যথেষ্ট হবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
৮ জুলাই ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে জার্মানি ও ব্রাজিল।—