বাংলাদেশে আসার ইচ্ছাই নেই অস্ট্রেলিয়ার!

 

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ সফর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টালবাহানা অনেক পুরোনো। সেই পন্টিংদের আমলে শোনা যেতো, তারা বাংলাদেশে খেলতে আসবেন তবে শর্ত একটাই, ঢাকার বাইরে যাবেন না। এই অস্ট্রেলিয়া ২০১৫ সালে নিরাপত্তার অজুহাতে টেস্ট সিরিজ খেলতে আসেনি বাংলাদেশে। ২০১৭ সালে সেই সিরিজ যখন আয়োজনের দ্বারপ্রান্তে, তখন তাদের ক্রিকেটাররা বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। এই দোহাই দিয়ে এবারের সিরিজও বাতিল হয়ে যেতে পারে। এমন সময় অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ একটি সংবাদ মাধ্যমে যা বলছে তার মানে একটাই, ইচ্ছে করেই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবে না অস্ট্রেলিয়া দল!

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের ক্রীড়া সাংবাদিক ম্যালকম নক্স তার এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এবং অসি ক্রিকেটারদের মনোভাব তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, বাংলাদেশ সিরিজের পেছনে ডলারের গুরুত্ব কাজ করছে। ‘সব টেস্ট ম্যাচ সমান, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা বেশি সমান। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার এবং বোর্ড যদি সমাধানে পৌঁছায় তবে সেটা হবে অ্যাশেজের কথা চিন্তা করে। বাংলাদেশে যে সিরিজ রয়েছে সেটা সম্ভবত পথের পাশেই রয়ে যাবে,’ লিখেছেন ম্যালকম। অস্ট্রেলিয়ার সব ক্রিকেটার বোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। তাদের দাবি, সবাইকে বোর্ডের লভ্যাংশের ভাগ না দিলে দেশের হয়ে খেলবেন না। এরই মধ্যে দেশটির ‘এ’ দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল করেছে। সিডনি মর্নিং হেরাল্ড বলছে, সত্যিকার অর্থে ‘এ’ দলের সফর বাতিল হওয়া কোনো ব্যাপার নয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু তারা অ্যাশেজ ছাড়বে না! বাংলাদেশ সিরিজের বাইরে সামনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজ সিরিজ রয়েছে। রয়েছে ভারত সফরও।

ম্যালকম বলছেন, টাকার কুমির ভারতকেও রাগাতে চাইবে না ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। গত বৃহস্পতিবার সিএ’র প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এক সপ্তাহের ভেতরে আমরা একটা সমাধানে পৌঁছুবো। ক্রিকেটাররা খেলতে রাজি না হলে ক্রীড়ামন্ত্রীকে ডেকে ‘স্বাধীন সালিসি’তে বসা হবে। ম্যালকম তার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তাদের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ‘২০১৫ সালে নিরাপত্তার কথা বলে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সফর বাতিল করে। উপনিবেশবাদী অস্ট্রেলিয়ার এতে কি খুব একটা ক্ষতি হয়েছে? আসলেই না। এটা তো বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড কিংবা অন্য কোনো দল নয়।’ ক্রিকেটবিশ্বে এখন বাংলাদেশের কদর আকাশচুম্বী। উন্নতির এই পথে অন্য টেস্টখেলুড়ে দলের কাছ থেকে ক্রিকেটীয় সাহায্য পেলেও অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি কখনও। সর্বশেষ ১১ বছর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে টেস্ট খেলেছে দলটি। ইংল্যান্ড ‘হোম ও অ্যাওয়ে’ ম্যাচ খেলেছে। ভারত তিনবার ঢাকায় এসেছে, বাংলাদেশ গেছে একবার। দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, শ্রীলংকাও নিয়মিত বাংলাদেশ সফর করে। শুধু অস্ট্রেলিয়াই আসতে চায় না। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথম ১৩ বছরে ৭৮ টেস্টে মাত্র তিনটিতে জয় পায় বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ চার বছরে ছয়টি জয় এসেছে। হার নয়টিতে, ড্র সাতটি। দীর্ঘ এই যাত্রায় ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় যায় বাংলাদেশ। তারা এসেছিলো ২০০৬ সালে।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ড বলছে, সর্বশেষ সফরেও খেলায় খুব একটা মনোযোগ ছিলো না শেন ওয়ার্নদের। প্রথম ইনিংসে ১১২ রান দিয়ে উইকেটহীন ছিলেন ওয়ার্ন। দলের ভেতর তখন এমনও বলাবলি হচ্ছিল, এর চেয়ে বাড়ি যাওয়া ভালো ছিলো!