বাংলাদেশের প্রমাণের ম্যাচ

স্টাফ রিপোর্টার: ২০০৪ সালের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম বা ২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অফ স্পেন, কিংবা ২০১২ সালে মিরপুরে এশিয়াকাপ -ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের আছে স্মরণীয় সব জয়। কিন্তু পোশাক যখন রঙিন থেকে পাল্টে হয় সাদা, বাংলাদেশের পারফরম্যান্সটাও তখন হয়ে যায় বড্ড সাদামাটা। ভারতের বিপক্ষে ৭ টেস্ট খেলে জয় নেই একটিও!

২০০৭ সালে একটি টেস্ট অবশ্য ড্র করতে পেরেছিলো বাংলাদেশ, তবু চট্টগ্রামে সেটিও ছিলো বৃষ্টির উপহার। তবে এবার ক্রিকেট মাঠেই বিরাট কোহলিদের সাথে লড়তে চায় স্বাগতিকরা। ফতুল্লায় একমাত্র টেস্টে ভালো খেলে বিশ্বকে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণেও নিজেদের এগিয়ে চলার প্রমাণ দিতে চান মুশফিকুর রহিম। আজ বুধবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রথম টেস্ট শুরু হবে সকাল ১০টায়। ফতুল্লা টেস্টে ভারতের মতো বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে নিজ দেশের আবহাওয়াও। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা গোটা দলের। মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে উইকেটও। ভিন্ন রকমের উইকেট কেমন আচরণ করবে তা নিয়ে সংশয়ে আছেন খোদ স্বাগতিক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। তবে প্রথম দুই দিন যে ব্যাটিং সহায়ক হবে তা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই ফতুল্লায় অনেক ম্যাচ খেলা মুশফিকের। তাই টসকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন তিনি। যদি আমরা ব্যাটিং নিয়ে ভালো না করতে পারি, তখন মনে হবে বোলিং নিলে ভালো হতো। টস হেরেও যদি আমরা ভালো খেলি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কোন পর্যায়ে আছি, তাদের সাথে ভালো খেললে সেটা প্রমাণিত হবে।

পাকিস্তান সিরিজের পর বোলারদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুশফিক। তবে ভারত ম্যাচের আগে বোলারদের ওপর আস্থা ফিরেছে অধিনায়কের। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তিনি। যদিও এই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদেরই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন মুশফিক। মাহমুদউল্লাহ ও শাহাদাত হোসেনের চোটে স্বাগতিক দলে দুটি পরিবর্তন অনিবার্য। মাহমুদউল্লাহর চোটে টেস্টে প্রথমবারের মতো চার নম্বরে ব্যাট করতে পারেন দলের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক। ডান হাতের অনামিকার চোট সম্পূর্ণ সেরে না উঠলে এই ম্যাচে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে পারেন তিনি। মুশফিক কিপিং না করলে অভিষেক হতে যাচ্ছে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান লিটন দাসের। ঘরোয়া ক্রিকেটে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা এই তরুণ দলের প্রয়োজনে যেকোনো পজিশনে ব্যাট করতে প্রস্তুত। স্পিনাররা সহায়তা পেতে পারেন ফতুল্লায়। তাই সাকিব আল হাসানসহ চার স্পিনার নিয়ে খেলতে পারে বাংলাদেশ। দলে ফিরতে পারেন লেগস্পিনার জুবায়ের হোসেন। তিন স্পিনার নিয়ে খেললে জুবায়ের, শুভাগত হোম চৌধুরীর যে কোনো একজনকে বেছে নিতে হবে স্বাগতিকদের। চার স্পিনার খেলানো হলে একজন পেসার নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে চোট কাটিয়ে ফেরা রুবেল হোসেনের কাছে জায়গা হারাতে পারেন মোহাম্মদ শহীদ।

ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির মনে অবশ্য উইকেট নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তার বিশ্বাস ফতুল্লায় প্রচুর রান হবে। রান করার জন্য দুই-তিন জন ব্যাটসম্যান ভালো করলেই হলো। তাই ছয় ব্যাটসম্যান, পাঁচ বোলার নিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত এক রকম চূড়ান্তই করেছেন তারা। শেষ তিন দিন উইকেট কেমন আচরণ করবে তা দেখে তৃতীয় পেসার না স্পিনার খেলানো হবে তা ঠিক করবে ভারত।

বাংলাদেশের উন্নতিতে মুগ্ধ কোহলি মনে করেন, ভারতের বিপক্ষে লড়াই করার সামর্থ্য স্বাগতিকদের রয়েছে।