প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার: টেস্ট ইতিহাসে আটটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। এরমধ্যে প্রথম সাতটি সিরিজই জিতেছিলো লঙ্কানরা। তবে গত মার্চে শ্রীলঙ্কার মাটিতে দু’ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে বাংলাদেশ। আজ থেকে শুরু হওয়া দুই ম্যাচের সিরিজের আগে গত সিরিজের ফলাফল উৎসাহ যোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে দলগত পারফরমেন্সরকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অধিনায়কত্ব করবেন বাংলাদেশের শততম টেস্টে একাদশে সুযোগ না পাওয়া মাহমুদুল্লাহ। অপরদিকে, সিরিজে ভালো শুরুর প্রত্যাশা শ্রীলকার অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমালের। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে সকাল সাড়ে নয়টায়।

২০০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের ওই ম্যাচে ইনিংস ও ১৩৭ রানের ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। পরের বছরই দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হবার সুযোগ পায় দু’দল। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। সেই জয়ের ধারা পরের ছয় সিরিজেও অব্যাহত ছিলো লঙ্কানদের। কিন্তু গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে এই প্রথম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে হারের লজ্জা এড়ায় টাইগাররা। ওই সিরিজের প্রথম ম্যাচ ২৫৯ রানের ব্যবধানে হারলেও, দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ৪ উইকেটে জিতে নেয় বাংলাদেশ। জয় পাওয়া টেস্টটি ছিলো বাংলাদেশের শততম টেস্ট। দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ে সিরিজও ড্র করে বাংলাদেশ। তাই ওই সিরিজটিই বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপদান। এটিকে পুঁজি করেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবারও টেস্ট সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

তবে দলগত পারফরমেন্সের দিকেই বেশি জোড় দিচ্ছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম টেস্টের আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রিয়াদ বলেন, ‘আমি সবসময় একটা জিনিস বিশ্বাস করি যদি সবাই দলগতভাবে ভালো পারফরম্যান্স করে তাহলে অধিনায়কত্ব করা খুব সহজ হয়ে যায়। আমাদের সবার লক্ষ্য থাকবে, যেটা আমাদের সবার স্ট্রেন্থ- আমরা দল হিসেবে ভালো পারফর্ম করি। এবারও আমাদের লক্ষ্য থাকবে দলগতভাবে ভালো পারফর্ম করা। সেটা যদি করতে পারি তাহলে আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে সবকিছু। দলে বেশ ক’জন কম-বেশি অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে এবং জুনিয়র ক্রিকেটাররা সবাই বেশ কো-অপারেটিভ। সেদিক থেকে আমি বলবো আমার জন্য ভালো হবে।’

প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো ফলাফলের জন্য দলগত পারফরমেন্সের দিকে চোখ রাখার পাশাপাশি টেস্টের পাঁচ দিনকেই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন মাহমুদুল্লাহ। ম্যাচের প্রতিটি দিন, প্রতিটি সেশন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের বলে জানান রিয়াদ, ‘প্রথমেই যেটা বললাম ক্রিকেটারদের জীবনে চ্যালেঞ্জ থাকবে। ব্যক্তিগতভাবে আপনি চ্যালেঞ্জটা কিভাবে নিচ্ছেন সেটাই গুরত্বপূর্ণ। আপনি যদি ইতিবাচক হিসেবে দেখেন তাহলে আপনার জন্য ইতিবাচক হবে। আর যদি নেতিবাচক চিন্তা করেন, মন খারাপ নিয়ে বসে থাকেন তাহলে আমার মনে হয় না এগুলো কোনো বেনিফিট দেয়। প্রতিদিনই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ থাকবে। আর টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন ফরম্যাট। পাঁচদিন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি দিনই, বিভিন্ন সেশন বাই সেশনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। সেশন বাই সেশন খেলাটাই ভালো। স্টেপ বাই স্টেপ যাওয়াটাই ভালো হবে।’

সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচ হেরে এবারের বাংলাদেশ সফর শুরু করে শ্রীলঙ্কা। নতুন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধিনে যাত্রাটা সুখকর হয়নি তাদের। জিম্বাবুয়ের কাছে ১২ রানে হারের পর বাংলাদেশের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ১৬৩ রানের বিশাল ব্যবধানে বাংলাদেশের কাছে হার মানে লঙ্কানরা। ফলে ফাইনালে যাবার পথ অনেকখানিই রুদ্ধ হয়ে যায় হাথুরুসিংহের শিষ্যদের। কিন্তু সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে জ্বলে ওঠে শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত দুটি জয় তুলে নিয়ে ফাইনালের টিকেট পায় লঙ্কানরা।

ফাইনালে শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ ছিলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। তবে ফাইনালে বাংলাদেশকে পাত্তাই দেয়নি শ্রীলঙ্কা। ৭৯ রানে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ জিতে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরে শ্রীলঙ্কা। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতলে টেস্ট সিরিজে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল। তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা প্রতিযোগিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে এসেছি। ফেবারিট পছন্দ করার ব্যাপারটা আপনাদের ওপর নির্ভর করে। দলীয়ভাবে আমরা শুরুটা ভালো করতে চাই। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুয়ায়ী খেলার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা আগে ভালো করেছে। শেষ চার বছরে আমরা এখানে টেস্ট খেলিনি। আমাদের রেকর্ড বাংলাদেশ খুবই ভালো। বাংলাদেশ এখানে ভালো ক্রিকেট খেলে আসছে। ভালো করার জন্য দু’দলের জন্য এই সিরিজ চ্যালেঞ্জ হতে পারে।’

এদিকে ২০২০ বিশ্বকাপে ১৬টি দেশ অংশ নেবে। দেশগুলো হলো: অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, জিম্বাবুয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান, হংকং, আয়ারল্যান্ড।